October 28, 2024

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ  শ্রীমতি নদীতে বর্ষার দেখা না মেলায় সুস্বাদু নদীর মাছের স্বাদ হারাতে বসেছে ভোজন প্রিয় বাঙালিরা

1 min read

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ  শ্রীমতি নদীতে বর্ষার দেখা না মেলায় সুস্বাদু নদীর মাছের স্বাদ হারাতে বসেছে ভোজন প্রিয় বাঙালিরা

তনময় চক্রবর্তী পুটি কিংবা রাইখোর মাছ ভাজা।পাবদা কিম্বা রাইখর মাছ ভাজা ।পাবদা কিম্বা গলসা ট্যাংরার কাঁচা লঙ্কা কাটা ঝোল।পিয়ালী কিংবা তিন কাটার চট চটি খেতে কোন বা বাঙালি পছন্দ না করেন।কিন্তু ভাদ্র তে ও উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের  শ্রীমতি নদীতে বর্ষার দেখা না মেলায় সুস্বাদু নদীর মাছের স্বাদ হারাতে বসেছে ভোজন প্রিয় বাঙালিরা।উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মাছের জেলা বলে পরিচিত। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মত উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে প্রচুর মাছ জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের অন্য প্রান্তে ও যায়।এমন কি রাজ্য ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য তে ও যায়।

উত্তর দিনাজপুর জেলায় পুকুরে যেমন মাছ চাষ হয় তেমন ই বর্ষায় নদীনালা , খাল বিল পুকুর জলে ভরে উঠার ফলে বাজারগুলিতে দেখা মেলে পুটি,রায়খোর,পাবদা, গলসা ট্যাংরা ,পিয়ালী, তিন কাটা, চেলা, চাঁদা , বেলে , সরপুঁটি, গচি, আড়,বাচা,বোয়াল মাছ।কিন্তু এবার শ্রাবন পেরিয়ে ভাদ্র চলে এলেও কিন্তু কালিয়াগঞ্জ এর শ্রীমতি নদীতে বর্ষার দেখা নেই,তেমন ই পুকুর ,জলাশয়ে ও জল না থাকায় এইসব নদীয়ালী মাছের দেখা মিলছে না।আর তাতেই একরাশ আফসোস রসিক ভজন বাঙালির গলায়। এক মৎস্যজীবী বলেন গত কয়েক বছর আগে শ্রীমতি নদীতে প্রচুর পরিমাণে তিন কাটা, চান্দা, চেলা রায় খোড়, পাবদা মাছ ধরেছি।

বাজারে নিয়ে গেলে দাম মিলত না। তবুও ভালভাবে সংসার চলত। কিন্তু সেইসব মাছ আর জালে ধরা পড়ে না। ছোট থেকে যেসব নদী আলী মাছ ধরেছি। এখন সেইসব মাছ গুলি দেখা না মেলায় মন খারাপ। আরেক মৎস্যজীবী বরুণ হালদার জানান, বৈশাখ মাস থেকে বাজারে নদীয়ালি মাছ আমরা বিক্রি করতাম। আষাঢ় মাসে নদীর প্রচুর মাছ বাইরে যেত। কিন্তু এবার শ্রাবন পেরিয়ে ভাদ্র আসলেও বর্ষা না হওয়ায় নদি আলী মাছের দেখা নেই।

মৎস্যজীবী শ্যামল হালদার বললেন, আগে নদীতে জল যেমন থাকতো তেমনি প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।হঠাৎ বাড়িতে কোন আত্মীয় এলে জাল নিয়ে নদীতে কিংবা বিলে চলে যেতাম। দশ থেকে কুড়ি মিনিটের মধ্যে অনেক মাছ ধরা পড়তো। বাড়ির খাবারের জন্য রেখে বাজারে বিক্রি করতাম। এখন আমাদের কাছে সেসব গল্প। গৃহবধূ পম্পা বসাক জানান, আগে বাজার থেকে বিভিন্ন চুনো মাছ নিয়ে আসতো।

সেগুলো কুটতে বিরক্ত লাগত। নদী র সেই সব মাছ এখন আর বাড়িতে আসে না। তাই পুরনো দিনের কথা মনে পড়লে মাছ কাটার ভীষণ ইচ্ছা হয়। কালিয়াগঞ্জ এর এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, আগে নদী আলী মাছ খাবার জন্য বাইরে থেকে অনেক মানুষ তাদের হোটেলে আসতো। আমরাও নদীয়ালি মাছের বিভিন্ন পদ তৈরি করে রাখতাম। কিন্তু এখনো নদী আলী মাছ আর দেখা যায় না।

যদিও হঠাৎ পাওয়া যায় তার দাম প্রচুর। কালিয়াগঞ্জ এর প্রবীণ এক বাসিন্দাআক্ষেপের সুরে বলেন আজ থেকে গত কয়েক বছর আগেও কালিয়াগঞ্জ শ্রীমতি নদী থেকে প্রচুর পরিমাণে পুটি, রায় খর , পাবদা, ট্যাংরা, তিন কাটা মাছ পাওয়া যেত। তার সাধ ছিল একদমই আলাদা। কালোজিরে ফোড়ন দিয়ে কাঁচা লঙ্কা কাটার ঝোল করলেই স্বাদ লাগত। নদীয়ালি মাছের স্বাদের কথা আজও ভুলতে না পেরে মাঝেমধ্যেই বাজারে চলে আসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *