October 28, 2024

তৃণমূল কংগ্রেস দলটার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড উল্টোপুরণ, এই নিয়েই তো ক্ষোভ।

1 min read

তৃণমূল কংগ্রেস দলটার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড উল্টোপুরণ, এই নিয়েই তো ক্ষোভ।

২৯ নভেম্বর রবিবার। জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ, উঃ দিনাজপুর।অনেকদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক অন্দরমহলে ভিতরে ভিতরে দানা বাঁধতে শুরু করেছিল ক্ষোভ। আর সেই ক্ষোভ তুষের আগুনের মতো সুপ্ত অবস্থায় থাকতে থাকতে হঠাৎ করে ক্ষোভের সেই আগুনের শিখা দাউদাউ করে বেড়িয়ে আসে। আর আসবে না বাই কেন? সংগঠন পরিচালনার উলটোপুরণ। সেই উলটোপুরণ এর কথাই হয়তো বলতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর একথা পরিষ্কার করে বলতে চেয়ে হয়তো তাঁর মতো একজন লড়াকু তৃণমূলী সৈনিক কে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। তবে জননেতার কাছে কুছ পরোয়া নেই বলেই সগর্বে বুক চিতিয়ে তিনি সকল প্রকার সরকারি পোষাক খুলে দিয়েছেন।

এবার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে একটু ফিরে দেখা। তৃণমূল কংগ্রেসের মাদার সংগঠনের ছত্রচ্ছায়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের সকল শাখা সংগঠন। দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় স্তরে দলের সভাপতি সুব্রত বক্সি। রাজনৈতিক দলের মাদার সংগঠনের নেতৃত্বে, সুপরামর্শে, সকল শাখা সংগঠনগুলো তাদের নিজ নিজ সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনও শোনা যায় নি রাজনৈতিক দলের মাদার সাংগঠনিক নেতৃত্বদের শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব পরিচালনা করেন। হ্যাঁ করেন এবং করে আসছেন এবং করছেন বলেই তো এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীত্ব পদে ইস্তফা দেওয়ার পরপরেই নড়েচড়ে বসতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন যেভাবে উল্টোপথে হাঁটছিল তা আরো একবার দেখা গেল যা নিয়েই তো ইতিপূর্বে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক পরিচয় তিনি যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। নতুন করে তিনি রাজ্যের কোর কমিটির সদস্য। বর্তমানে দলে পর্যবেক্ষক পদ টি নেই। মালদা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের মাদার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দের নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সি বসছেন না, কোর কমিটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বসছেন না, দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসছেন না সেখানে যুব সংগঠনের সভাপতি তড়িঘড়ি তলব করেছিলেন গতকাল কলকাতায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় তার নিজস্ব অফিসে মালদার তৃণমূল কংগ্রেসের মাদার সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দের‌। সাংসদ তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা এদিনের জরুরি বৈঠকে ছিলেন মালদা জেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডল, প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী ও জেলার দুই কো–অর্ডিনেটর দুলালচন্দ্র সরকার ও অম্লান ভাদুড়ি। জানা গিয়েছে, বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরও। শাখা সংগঠনের সভাপতি কতৃক মাদার সংগঠনের নেতৃত্ব দের সাংগঠনিক মিটিং এ আহ্বান কি সাংগঠনিক উলটোপুরণ নয়? এই প্রশ্ন তুললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পোড় খাওয়া তৃণমূলী নেতৃত্ব। হয়তো মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মৌসুম বেনজির নূড় এবং সাবিত্রী মিত্র ডাকে সাড়া দেন নি এবং যারা দিয়েছেন তাদের অধিকাংশই নৈব নৈব চ গোছের উপস্থিতি। শুধু সংগঠনের উলটোপুরণ নয় সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সি কে গান্ধারী করেও রাখা হচ্ছে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করছেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি তে একদিকে শাখা সংগঠন কে দিয়ে মাদার সংগঠনকে পরিচালনা কোনোমতেই যেমন রাজনীতি পাঠ শেখা নেতৃত্বরা মেনে নিচ্ছেন না অসম্মান বোধে, ঠিক তেমনি অপরদিকে কর্পোরেট স্টার পি কে মহাশয় কে দিয়ে বাংলার মানুষের কাছে নতুন করে তৃণমূল কংগ্রেস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলার গর্ব মমতা , সংগঠনের পাঠশালা ইত্যাদি প্রজেক্ট করা সেটাও মেনে নিতে পারছেন না তৃণমূলী নেতৃত্ব ও কর্মীরা এমনকি বাংলার জনগন। যে ভাবমূর্তি ২০১১ সালে মানুষের হৃদয়ে স্থান পেয়েছিল আজ সেখানে কর্পোরেট স্টার কে দিয়ে পেড়েক ঠুকলে হবে? ব্যাথা অনুভব করছেন বাংলার সেই মানুষরা। এমন কথাই উগরে দিলেন বয়স্ক কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক যারা ঐ সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেই তৃণমূল কংগ্রেস কে ভোট দিয়ে আসছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের মুখেও সেই কথা। তারা বলছেন পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। ঘড়ে ঘড়ে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অধীনে মানুষ উপকৃত হয়েছে যেমন সত্যি তেমনি ৯ বছরে প্রতিটি স্তরের অনেকাংশ তৃণমূল নেতৃত্বের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, ব্যবহার, টাকাপয়সার লেনদেনে মানুষের চোখের জল ফেলে দেওয়া ইত্যাদি ধীরে ধীরে তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রতি একটা গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে মাত্র। তার উপর সাংগঠনিক উলটোপুরণে নেতৃত্ব দের মধ্যে অভিমান ও বীতশ্রদ্ধতা সবদিক দিয়ে এবারের একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াতে হবে তৃণমূল কংগ্রেস কে এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ২০১১ সালের পরিবর্তনের ডাকের সুরে বাংলার মানুষের কাছে ২০২১ এর গান নাকি নতুন সুরে বাংলার মানুষ গান ধরবেন সেটাই দেখার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *