October 28, 2024

আসছে সমতলে কমলালেবু

1 min read

আসছে সমতলে কমলালেবু

শীত পড়তেই বক্সা পাহাড়ের কমলালেবু সমতলে নামতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের বাজারগুলিতে দার্জিলিং ও নাগপুরের কমলালেবুর পাশে জায়গা করে নিয়েছে বক্সার কমলা। উদ্যানপালন দপ্তরের দাবি, শীতের মরশুমের শুরুতে দার্জিলিং মেন্ডারিন প্রজাতির কমলালেবুর মিষ্টি স্বাদ একটু কম থাকে।

উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বক্সা পাহাড়ে এবার মোটামুটি ৩৯ হেক্টর জমিতে কমলালেবু চাষ হয়েছে। তবে এবারও পোকার উপদ্রবের কারণে বক্সার ১৩টি পাহাড়ি গ্রামে কমলার আশানুরূপ ফলন হয়নি। বক্সার কমলালেবু চাষি সোনু ডুকপা, নাদো ডুকপা, চৌচিরি ডুকপা বলেন, পোকার উপদ্রবের জন্য এবারও ফলন ভালো হয়নি। তবে পোকামাকড়ের উপদ্রব বন্ধে উদ্যানপালন দপ্তর ২০১৬ সাল থেকে বক্সার মাটি পরীক্ষা করে কমলা চাষিদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে। চাষিদের রোগ ও পোকামাকড় সহনশীল ‘দার্জিলিং মেন্ডারিন’ প্রজাতির কমলার চারা দেওয়া হয় উদ্যানপালন দপ্তর থেকে।

চাষিদের দেওয়া হয় সার ও প্রশিক্ষণ। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে তার সুফল পাচ্ছেন সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ২৯০০ ফুট উচ্চতায় বক্সা পাহাড়ের কমলালেবু চাষিরা।উদ্যানপালন দপ্তরের জেলা আধিকারিক সন্দীপ মহন্ত বলেন, কমলালেবুর গাছ ও ফলের প্রধান শত্রু হল জাব ও ল্যাদাপোকা। ল্যাদাপোকার হানায় কমলার গাছ এবং জাবপোকার হানায় ফল নষ্ট হয়ে যায়। এই পোকা তাড়াতে দপ্তর থেকে কমলালেবু চাষিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে সহায়তা করা হচ্ছে।সদরবাজার, লালবাংলো, ডারাগাঁও, চুনাভাটি, আদমা, তাসিগাঁও, লেপচাখা, ওচলুং সহ বক্সার ১৩টি গ্রাম থেকে কমলালেবু সমতলে আসতে শুরু করেছে। তবে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বক্সার কমলায় মিষ্টির ভাব বাড়তে থাকে।আলিপুরদুয়ার পুরসভার বাজারগুলিতে নাগপুর, দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে বক্সার কমলা। বক্সা পাহাড় থেকে আসা ছোট আকারে সবুজ ছোপের কমলা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকায়। সাইজে বড় কমলালেবু বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা পিস। আলিপুরদুয়ার বউবাজারের ফল বিক্রেতা কেবল সাহা বলেন, স্থানীয় কমলালেবু বলে বক্সার কমলালেবুর প্রতি জেলার মানুষের আলাদা একটা আবেগ আছে। ফলে নাগপুর ও দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর সঙ্গেও দেদার বিক্রি হচ্ছে বক্সা পাহাড়ের কমলা।অতীতে দেশে বক্সা পাহাড়ের কমলার চাহিদা ছিল। ১৯৯৩ সালের বন্যায় হিমালয়ের সিঞ্চুলা রেঞ্জের বক্সা পাহাড়ে ভূমিক্ষয় হয়। ওই সময় লক্ষাধিক কমলালেবুর গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বন্যায় মাটির চরিত্র পাল্টে যাওয়ায় সেই থেকে বক্সার কমলালেবু গাছে ও ফলে ল্যাদা ও জাবপোকার হানাদারি শুরু হয়েছে। জেলা সদর ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের হাটে বাজারে বক্সার কমলা বিক্রি হচ্ছে। চাষিরা জানান, শীতের মরশুমের শুরুতে বক্সার কমলালেবুতে ছোপ ছোপ সবুজ ভাব থাকে। ফলে এ সময় এখানকার কমলার মধ্যে একটু কম থাকে মিষ্টত্ব। কিন্তু ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বক্সার কমলার গায়ে পুরো হলুদ রং চলে আসে। তখন মিষ্টির তীব্রতাও বাড়তে থাকে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *