” বাংলার গর্ব মমতা ” ব্যানারে আপ্লুত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের কাছে ” কালিয়াগঞ্জের গর্ব ” নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন।
1 min read” বাংলার গর্ব মমতা ” ব্যানারে আপ্লুত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের কাছে ” কালিয়াগঞ্জের গর্ব ” নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।পাখির চোখ একুশের বিধানসভা নির্বাচন। সেই ফাইনাল ম্যাচ জয়ের লক্ষ্যে ” দিদিকে বলো”র পর দ্বিতীয় দফায় তৃণমূলের মেগা কর্মসূচি ” বাংলার গর্ব মমতা”। এই স্লোগানকে হাতিয়ার করেই এবার কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সূচনা হয়েছিল ” বাংলার গর্ব মমতা ” কর্মসূচির। বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছিল এই কর্মসূচিকে। কী কী থাকছে এই কর্মসূচিতে? চলুন জেনে নেওয়া যাক,,,,,,
১) তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন- দলের লোকে সঙ্গে কথা বলা।
২) জলযোগে যোগাযোগ- সাংবাদিকদের সঙ্গে দল নিয়ে কথা বলা।
৩) স্বীকৃতি সম্মেলন- দলের পুরোনো কর্মী, নেতা, যাঁরা নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন, তাঁদেরকে জাগিয়ে তোলা, ফিরিয়ে আনা ।
৪) বঙ্গধ্বনি যাত্রা- গোটা রাজ্যে সব মিলিয়ে ৪০ হাজার কিলোমিটার যাওয়া। সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান, ধর্মস্থানে যাওয়া।
৫) সংহতি সভা- তফসিলি জাতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করা।
৬) চেতনা সভা- তফসিলি উপজাতির মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানো।
৭) বাংলার বার্তা- সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে বই বার করা।
৮) নবীনবরণ সভা- দলে যুব সদস্যসংখ্যা বাড়ানো। যুবরা যোগ দিলে নবীনবরণ করা।
৯) বিশিষ্ট সম্মেলন ও তৃণমূলের সঙ্গে মান্যজন- সমাজের বিশিষ্ট মানুষ যাঁরা, সেইসব বিদ্বান ও বুদ্ধিজীবী মানুষদের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানো, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা।
১০) তৃণমূল পদাতিক সম্মেলন- বিভিন্ন ইস্যুতে জনচেতনা গড়ে তুলতে ও জনসংযোগ বাড়াতে মিছিল করা।
এই কর্মসূচির ১০ টি বিষয়ের উপর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব ও কর্মীরা অতি উৎসাহের সাথে রাজ্যের সর্বত্র একজোট হয়ে পালন করার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকেও দেখা যায় এই দৃশ্য। বিশেষতঃ কালিয়াগঞ্জ শহর অর্থাৎ পৌর এলাকায় এই সরকারের আমলে ঢালাও আর্থিক সহায়তায় শুরু হয় উন্নয়নের কর্মকাণ্ড। কারণ কালিয়াগঞ্জ পৌর বোর্ড ২০১৬ সালে ডিগবাজিতে কার্তিক চন্দ্র পালের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের পৌর বোর্ড হয়ে যাওয়ার ফলে। ঠিক এমন পরিস্থিতির মাঝে চলে আসে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপ নির্বাচন। কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকের জনগন দুইহাত তুলে আশীর্বাদ করেছিল তপন দেব সিংহ কে। আর তার ফলেই ১০ বছরের মা মাটি মানুষের সরকারের আমলে ২০১৯ সালে প্রথমবার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক পায় কালিয়াগঞ্জ , আর নতুন বিধায়ক হন তপন দেব সিংহ। ” বাংলার গর্ব মমতা ” ব্যানারে আপ্লুত তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের অতি উৎসাহে সকল নেতৃবৃন্দের পাশে থাকতে দেখা গেলেও বর্তমানে সেইসকল নেতৃত্বদের একতার চিত্রে যেমন ফাটল দেখা দিয়েছে তেমনি তাদেরকে কেন্দ্র করে কর্মীদের মধ্যেও ফাটলের চিত্র ফুটে উঠছে। ” বাংলার গর্বমমতা ” ব্যানারে অনেক তৃণমূলী দের বন্দনা করতে দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমান কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল কে নিয়ে , অপরদিকে অনেক তৃণমূলী দের বন্দনা করতে দেখা যাচ্ছে বিধায়ক তপন দেব সিংহ কে নিয়ে।
বিশেষ করে যখন ১০ টি ধাপে জনসংযোগ কর্মসূচি এক অনন্য প্রকল্প ” বাংলার গর্ব মমতা ” নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক শ্রীবৃদ্ধি চলছে ঠিক সেই সময় কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব ও কর্মীরা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরছেন। এতটাই বিচ্ছিন্ন যে তাদের মধ্যে ” কালিয়াগঞ্জের গর্ব” কে এই নিয়েও হাজারো প্রশ্নের যেমন উঁকি মারছে তেমনি চলছে নেতৃত্বদের মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষেদাগার ও রাজ্য নেতৃত্বদের কাছে নালিশের পালা। কে কাকে কিভাবে টেক্কা মারতে পারবে সেই কম্পিটিশন। জনসংযোগ এর চেয়ে নিজেরাই নিজেদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকার কম্পিটিশন মাত্র। বিধায়কের কোনো কাজ যেমন ” বাংলার গর্ব মমতা” ব্যানারের তলায় হলেও এক শ্রেণীর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধায়ক কে নিয়ে কোনো পোস্ট করছেন না অথচ পৌর প্রশাসকের কাজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছয়লাপ করছেন। আবার উল্টো ছবিও সেই অন্যের ক্ষেত্রে। আদতে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কঙ্কালসার চেহারায় ঢাকা পরছে ” বাংলার গর্বমমতা ” । সেইসাথে কালিয়াগঞ্জে সর্বত্র কানাঘুষা চলছে ” কালিয়াগঞ্জের গর্ব” কে। আর বেশিদিন নেই বিধানসভা নির্বাচন। জনসংযোগ, নেতাসংযোগ , কর্মীসংযোগ কে উপেক্ষা করে ” বিচ্ছিন্ন ” শব্দটি নিয়ে যতবেশি কালিয়াগঞ্জের তৃণমূলীরা মত্ত হয়ে ” কালিয়াগঞ্জের গর্ব কে ” এই ইগো তে ভুগবেন ততবেশি ” বাংলার গর্ব মমতা ” নামক ব্যানারটি কে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দলের আনুগত্য সৈনিক মনে করে সকলের উচিত দলের বৃহত্তর স্বার্থে কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকের জনগনের কাছে একতার সুর পৌঁছে দেওয়া, যে সুরে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের জনগন গান গাইবেন ” বাংলার গর্ব মমতা “।