October 28, 2024

লক্ষ্মী মন্দিরে গিয়ে কালিয়াগঞ্জ বাসীর মঙ্গল কামনা করলেন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কার্তিক চন্দ্র পাল,আর বললেন এটা আমার স্মৃতি বিজড়িত জায়গা

1 min read

লক্ষ্মী মন্দিরে গিয়ে কালিয়াগঞ্জ বাসীর মঙ্গল কামনা করলেন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কার্তিক চন্দ্র পাল,আর বললেন এটা আমার স্মৃতি বিজড়িত জায়গা

তনময় চক্রবর্তী লক্ষ্মী মন্দিরে গিয়ে কালিয়াগঞ্জ বাসীর  মঙ্গল কামনা করলেন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কার্তিক চন্দ্র পাল। আর বললেন এটা তার স্মৃতি বিজড়িত একটি জায়গা। যেখানে আজ থেকে কয়েক বছর আগেও তাকে আসতে হতো ব্যবসায়িক প্রয়োজনে।

 

কারণ এই মন্দিরের কাছাকাছি একটি তার ইটের ভাটা ছিল।তাই সেই জায়গায় আবার নতুন করে আসতে পেরে তার খুবই ভালো লাগছে। হ্যাঁ এমন চিত্রই দেখা গেল আজ উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর পূর্ব ভান্ডার গ্রামে একটি লক্ষ্মী পুজোর অনুষ্ঠানে।আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। আর এই কোজাগরী লক্ষ্মীপূজায় আর পাঁচটা বাঙালি যখন বাড়ি বাড়ি পুজো নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখন আস্ত কালিয়াগঞ্জ এর পূর্ব ভান্ডার গ্রামের মানুষরা সবাই মিলে কষ্টি পাথরের লক্ষী নারায়নের মূর্তি কে পুজো দিতে জোরকদমে ব্যস্ত। আজ দেখা গেল কালিয়াগঞ্জ এর পূর্ব ভান্ডার গ্রামে একটি শিব মন্দিরে গিয়ে  গ্রামবাসীদের সাথে  পুজো দিতে প্রশাসনিক কার্তিক চন্দ্র পাল কে  । যা  দেখে  গ্রামের মানুষরা  ভীষণ খুশি। গ্রামের মানুষরা বলেন   আগামী দিনে মন্দির কে আরও উন্নত করার জন্য কাত্তিক বাবুর কাছে কিছু আব্দদার করলেন। প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন এই মন্দিরের উন্নতি কল্পে তিনি সর্বদা চেষ্টা করবেন তার সাধ্যমত কিছু আর্থিক সাহায্য দিয়ে মন্দির কে কিছুটা উন্নতি করার জন্য।

উল্লেখ্য উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের ৭ নম্বর ভাণ্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামে লক্ষ্মী পূজোর আগে দশমীর পড়ের দিন থেকে গ্রামের কোন বাড়িতে আমিশ রান্না হয় না। গ্রামের সকলে মন্দির প্রাঙ্গনে লক্ষ্মী পূজা করতে ব্যস্ত থাকে। গ্রাম বাসিরা জানান আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর আগে লক্ষ্মী পূজাকে কেন্দ্র করে গ্রামে বাউল উৎসব চলছিল সেই সময় গ্রামের কৃষক নরেশ চন্দ্র বর্মন ,স্থানীয় গোকুল চন্দ্র বর্মণের জমিতে চাষ করার সময় নরেশ বাবুর লাঙ্গলের ফলায় আটকে যায় একটি পাথর।সঙ্গে সঙ্গে সে কোদাল দিয়ে পাথরটিকে তোলে।

পাথরটি জল দিয়ে পরিস্কার করলে দেখা যায় কাল পাথরে খোঁদায় করা লক্ষ্মী নারায়নের মূর্তি। মূর্তি পাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই সেই গ্রাম থেকে এমনকি দূরদূরান্ত থেকে কয়েক হাজার লোক হাজির হয়ে যায় ঐ মাঠে। এরপর পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দারা ঐ কাল পাথরের মূর্তিটিকে তাঁদের গ্রামে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে কালিয়াগঞ্জ থানা, জেলা প্রশাসন ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা ছুটে আসে।

মূর্তিটির পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় সেটি কষ্টি পাথরের মূর্তি। মূর্তিটি লম্বায় প্রায় দের ফিট, চওড়ায় এক ফিট। প্রশাসনের তরফ থেকে মূর্তিটিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করা হলে গ্রামবাসীদের বাঁধার মুখে পরে প্রশাসনকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। এরপর পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দারা একটি মন্দির বানিয়ে মূর্তিটির পূজো শুরু করে ২৫ বছর আগে।সারা বছর নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে দুবেলা করে পূজো করলেও কোজাগরী লক্ষ্মী পূজোর দিনটিতে মহাসমরহে পূজোর আয়োজন করা হয় এখানে। প্রতিবছর লক্ষ্মী পুজার দিন গ্রামের মহিলারা বাড়ির লক্ষ্মী পূজো কোনমতো সেরে সন্ধ্যার মধ্যে লক্ষ্মী নারায়ন পূজো মণ্ডপে এসে হাজির হন,কারন মন্দিরে পূজা না করলে তাদের পূজা সম্পন্য হয় না। পূজোকে কেন্দ্র করে গ্রামের সমস্ত মহিলারা উপোষ থাকেন।কিন্তু এবছর চিত্র টি একটু আলাদা করোনা আবহের কারণে।বছরের প্রতিদিন নিয়ম করে সকাল ও সন্ধ্যের সময় পূজো করা হয় এখানে। এই লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির খুব জাগ্রত। এখানে কেউ কোন কিছু মানত করলে মা লক্ষ্মী তাঁদের খালি হাতে ফেরান না। তাই গ্রামে বিয়ে বা অন্নপ্রাশন হলে লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরে এসে গ্রামবাসীরা প্রথমে পূজো দিয়ে যান। এই মন্দিরে গোটা বছর ধরে প্রচুর সোনা ও রুপার গহনা দান করেন ভক্তপ্রাণ মানুষজন। এই সকল গহনা সযত্নে জমা রাখা হয় লক্ষ্মী মাতার নামে। যার জমিতে এই কষ্টি পাথরের দেবী মূর্তি পাওয়া গেছে সেই গোকূল চন্দ্র বর্মণ লক্ষ্মী নারায়ণ মূর্তির মন্দির করার জন্য ২ কাঠা জমি দান করেছেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এখানে লক্ষ্মী নারায়ণ পূজো নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হচ্ছে। পূর্ব ভাণ্ডার গ্রামের লক্ষ্মী নারায়ণের পূজোকে কেন্দ্র করে আসে পাশের গ্রাম থেকে কয়েক হাজার লোকের সমাগম হয় এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *