রাজনীতিতে জ্ঞান নেই বর্তমান উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল এর বললেন বিধায়ক অমল আচার্য
1 min readরাজনীতিতে জ্ঞান নেই বর্তমান উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল এর, বললেন বিধায়ক অমল আচার্য
তনময় চক্রবর্তী রায়গঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস করে দখল করেছে পৌরসভা তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই পৌরসভায় মানুষ ঠিকঠাকভাবে যেতে পারে না। ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাস করে আগামী দিনে নির্বাচন করা যাবে না। মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বিগত দিনে সন্ত্রাস করার জন্য।সম্প্রতি জেলার সভাপতি তৃণমূল কংগ্রেসের কানাইলাল আগরওয়াল কালিয়াগঞ্জে একটি তৃণমূলের কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্তন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন , কানাইলাল আগরওয়াল দলে থেকে দল বিরোধী মন্তব্য করছেন উনি প্রসিদ্ধ কালিদাস হয়েছেন। তার মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং হতাশা ব্যঞ্জক। অমল বাবু বলেন এই ধরনের মন্তব্য খুবই নিন্দনীয়।
অমল বাবু বলেন বর্তমান জেলা সভাপতি তৃণমূলের তিনি হয়ত রাজনীতি জানেন না কিংবা কারো প্রতি ক্ষোভে এই কথাগুলি বলেছেন। তিনি বলেন রায়গঞ্জে যখন পৌর নির্বাচন হয় তখন এই জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন রাজ্যের মাননীয় মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ,তিনি ছিলেন জেলার সভাপতি তৃণমূলের পাশাপাশি রায়গঞ্জ পৌরসভার যুগ্ম প্রশাসকের দায়িত্ব তিনি ছিলেন। অমল বাবু বলেন তারা এক বছরের ব্যবধানে যে ধরনের রায়গঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন এর পরিকল্পনা করেছিলেন বাড়ি বাড়ি পানীয় জল থেকে শুরু করে রায়গঞ্জ শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা থেকে আলোকসজ্জা থেকে শুরু করে যেভাবে রায়গঞ্জের পরিবর্তন কয় মাসের মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন তা ছিল নজিরবিহীন।
তিনি বলেন লোকে নাকি বলতো সে সময় বিগত দিনে যিনি পৌরপতি ছিলেন তার সঙ্গে নাকি লোকে দেখা করতে পারতেন না তিনি দেখা করতেন না মানুষকে সময় দিতেন না। তিনি যুগ্ম প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়ে দলমত নির্বিশেষে ছোট-বড় যেই সাধারণ মানুষরা আসুক না কেন তাদের কথা তাদের অভিযোগের কথা তিনি মন দিয়ে শুনেছেন এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কথা শুনে ওয়ার্ড ভিত্তিক উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি নির্বাচন সংক্রান্ত যে মন্তব্য তার সহকর্মী তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস এর বর্তমান সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল করেছেন তা একটা রাজনীতি জ্ঞানশূন্য মানুষের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। কারণ রায়গঞ্জ পৌরসভার বারোটার সিট রায়গঞ্জ পৌরসভার রেল লাইনের ওপারে আছে।আর বাকি সিটগুলো রেল লাইনের এপারে রয়েছে। উনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন সেই সময়কার পৌর বোর্ডের একাধিক নির্বাচিত কাউন্সিলররা একের পর এক শুভেন্দু অধিকারীর হাত দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করে। এবং প্রত্যেকেই রায়গঞ্জের মানুষের কাছে জনপ্রিয় কাউন্সিলর হিসেবে বিবেচিত। এবং দীর্ঘদিন একবার নয় চারবার কখনো পাঁচবার করে একেকটি ওয়ার্ডে তারা জয়ী হয়ে আসছে। সেই সমস্ত কাউন্সিলররা তৃণমূল কংগ্রেসে সেই সময় যোগদান করে।অমল বাবু বলেন তারা নিশ্চিত হয়েছিলেন যে ১৭ থেকে ১৮ টি সিট তারা পাবেই। এটা ১০০ শতাংশ তিনি নিশ্চিত ছিলেন। গোয়েন্দা দের কাছে খবর ছিল যে রায়গঞ্জ পৌরসভা নিশ্চিত এবার তৃণমূল কংগ্রেস দখল করছে। তার কারণ কয়েকমাসের উন্নয়ন এবং কংগ্রেস থেকে কাউন্সিলররা ভেঙে যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছে জনপ্রিয় কাউন্সিলররা তাতে এবার পৌরসভা তৃণমূলের দখলে যাবে।অমলবাবু আরো বলেন নির্বাচনের সময়ে সারাদেশে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেই থাকে।এমন ঘটনা গোটা রাজ্যে গোটা দেশে ঘটবে না কেউতো গ্যারান্টি দিতে পারেনা। কিন্তু তিনি মনে করেন মানুষের রায়ে এবং মানুষের সুভা ইচ্ছায় এবং মমতা ব্যানার্জির শহর উন্নয়নের যে পরিকল্পনা এবং কয়েক মাসের মধ্যে যেভাবে সাহায্য করেছিল উন্নয়নের তৎকালীন তথা বর্তমান পৌর মন্ত্রী ববি হাকিম এবং শুভেন্দু অধিকারী। তাতে মানুষ আশাবাদী হয়েছিল রায়গঞ্জ পৌরসভায় তৃণমূলের বোর্ড ক্ষমতায় এলে অনেক ভালো পরিষেবা পাবেন। এবং রায়গঞ্জের উন্নয়ন হবে। বোর্ড টা সেই জন্যই এসেছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত সেই জন্যই ভোট দিয়েছে।তাই যে কথা বর্তমান জেলা সভাপতি তৃণমূলের কানাইলাল আগরওয়াল বলছেন তা তিনি মনে করেন একটা অবিবেচক এবং ঘরে থেকে কি বলতে হয় সেই জ্ঞানটা ও তার নেই। তিনি বলেন এটা তিনি সম্পূর্ণ দল বিরোধী মন্তব্য করেছেন। তিনি কানাইলালের মন্তব্যে খুবই দুঃখিত এবং মর্মাহত। এক কথায় বলা যায় উনি একজন সুপ্রসিদ্ধ কালিদাস।অপরদিকে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভার পর সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যের মন্ত্রী তথা গোয়ালপুকুর এর বিধায়ক গোলাম রব্বানী ঘোষণা করেন যারা জয়ী বিধায়ক রয়েছেন তারাই আগামী দিনের প্রার্থী। জেলায় তিনটি কেন্দ্রে মাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করবেন। আর গুলোতে সব ঠিক হয়ে আছে। মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্তন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বর্তমান ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, , জানিনা গোলাম রব্বানী কত বড় মন্ত্রী, কত বড় নেতা হয়েছেন। কিন্তু প্রার্থী তালিকা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া কেউ চূড়ান্ত করতে পারবে না। তাই গোলাম রব্বানীর এই ধরনের মন্তব্য করাটা ও একটা মূর্খের পরিচয়। এদিকে যত বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে ততোই উত্তর দিনাজপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল বেড়েই চলছে এ প্রসঙ্গে বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, যারা জেলা চালাচ্ছে। যারা জেলার লিডারশিপ আছে তারা যদি সঠিকভাবে সমন্বয় না করে তাহলে গোষ্ঠী কোন্দল বাড়বে এ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। তারা যদি এক পক্ষের হয়ে কাজ করে তাহলে আরেক পক্ষ অসন্তুষ্ট হবে। এখানে তাই হচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলায়। নেতৃত্তের কাজ হচ্ছে সবাইকে সমন্বয় করে একটা জায়গায় আনা। কিন্তু এখানে তো একটা গোষ্ঠী বাজি চলছে তারা তাদের কথাবার্তাতেই পরিষ্কার। আপনিতো একটা সময় জেলা সভাপতি ছিলেন বর্তমানে যিনি হয়েছেন জেলা সভাপতি তৃণমূলের তিনি আপনাকে কতটা সম্মান দিচ্ছেন ? এ প্রশ্নের উত্তরে বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, এটা আক্ষেপ করে কিছু বলবো না ।তবে আমি নিজের জায়গায় নিজে ঠিক আছি। দলের রাজ্য নেতৃত্ব যে টুকু নির্দেশ দেয় সেটা আমি পালন করছি অক্ষরে অক্ষরে। এদের কাছে কি পাবো জানিনা কারন এরা দলটার মর্যাদার টাই বোঝেনি।কি ধরনের কথাবার্তা তারা বলে ফেলছে সেটা থেকেই বোঝা যায় । এটা খুবই দুঃখজনক।