October 27, 2024

কাজ হারিয়ে প্রদীপের সলতে বানিয়ে সংসার চালাচ্ছেন চাকুলিয়ার স্কুলপাড়ার কয়েকশো বাসিন্দা।

1 min read

কাজ হারিয়ে প্রদীপের সলতে বানিয়ে সংসার চালাচ্ছেন চাকুলিয়ার স্কুলপাড়ার কয়েকশো বাসিন্দা।

পূজো – পার্বণ , উৎসব – অনুষ্ঠান, যে কোনো শুভ কাজ  আমরা প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু করি। আজকাল প্রদীপের এই সলতে আর কেউ বাড়িতে বানায় না, সবাই বাজার থেকে কিনে নেয়। তাই , প্রদীপের এই সলতের চাহিদা সারাবছরই থাকে। আগে তাঁরা দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানার মতো বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকের কাজ করতেন। কেউ কেউ বিদেশেও কাজ করতেন। লকডাউনে খালি হাতে তাঁদের বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। তবে বাড়ি ফিরে কী কাজ করে তাঁরা সংসার চালাবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছিলেন না।

শেষ অবধি পরিবারের মহিলারা বেছে নেন প্রদীপের সলতে বানানোর কাজ। এই কাজ করে তাঁরা সংসারের হাল ধরেছেন। চাকুলিয়ার বিডিও কানহাইয়াকুমার রায় বলেন, তাঁদের এই কাজকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। বাকি সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখে তা দূর করার চেষ্টা করা হবে।ওই এলাকার বাসিন্দা সামিনা বেগম বলেন, স্বামী বিদেশ থেকে ফেরার পর ভেবেছিলাম, হয়তো আমরা না খেয়ে মারা যাব। তারপর সলতে বানানোর কাজ শিখে কিছুটা দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। এই কাজ পাড়ার সব বাসিন্দাই করেন। তাঁর দাবি, প্রশাসনের তরফে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হলে তাঁদের উপকার হবে। সলতে বিক্রির কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের পুরুষরা। স্থানীয় বাসিন্দা তাহির হোসেন বলেন, কিশনগঞ্জের মতো শহরে গিয়ে সলতে বিক্রি করা হচ্ছে। ডজনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। সারাদিন বাজার ঘুরে বিক্রি করতে পারলে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। তাঁর বক্তব্য, সরকারের কাছ থেকে তাঁরা চাল-ডাল বিনামূল্যে পাচ্ছেন। সলতে বিক্রি করে উপার্জিত অর্থ সংসারের অন্য কাজে সহায়তা করছে।চাকুলিয়ার স্কুলপাড়ায় প্রায় ৩০০ মানুষ বসবাস করেন। আর্থিক দিক থেকে সকলের অবস্থাই খারাপ। বর্ষার সময় পুরো এলাকাটি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বৃষ্টির জল নামার পর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থাকে। পরিস্রুত পানীয় জলেরও ব্যবস্থা নেই। বেশিরভাগ পরিবারে শৌচাগার নেই। এই অবস্থায় এই পরিবারগুলির সদস্যরা আগে ভিনরাজ্যে গিয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা সবাই আর্থিক সংকটের মুখে পড়েন। সংসারের হাল ধরতে বাড়ির মহিলারা পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সলতে বানানোর কাজ শুরু করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *