কালিয়াগঞ্জের কুমারটুলির মৃৎ শিল্পীরা করোনাসুরের দাপটে চরম সঙ্কটে-
1 min readকালিয়াগঞ্জের কুমারটুলির মৃৎ শিল্পীরা করোনাসুরের দাপটে চরম সঙ্কটে-
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,১৭,সেপ্টেম্বর:একদিকে প্রতিমা তৈরির সাজ সরঞ্জাম নাগালের বাইরে অন্য দিকে করোনাসুরের দাপটে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের কুমারটুলি পালপাড়ার মৃৎ শিল্পীরা চরম সমস্যায় এবারের শারদ উৎসবের প্রাক্কালে।
মৃৎ শিল্পিদের অবস্থা এতটাই খারাপ বৃহস্পতিবার মহালয়া হবার দিন পর্যন্ত কোন দুর্গা প্রতিমার বরাত পায়নি। করোনা আবহে বেশি বাজেটের পূজা উদ্যোক্তারা এবার সব কিছু কাট ছাট করার কারনে বাজেট একেবারে কমিয়ে দিয়েছে।ফলে প্রতিমা তৈরীর কাজে উৎসাহ নেই।পড়েছে প্রতিমা তৈরিতে ভাটা।বিগত বছর গুলিতে এই সময় কালিয়াগঞ্জের কুমারটুলির মৃৎ শিল্পীরা যেমন চরম ব্যাস্ততার মধ্যে কাটায় তেমনি এবার চরম কর্মহীন হয়ে পড়েছে।কুমারটুলিতে গিয়েই সেই দৃশ্য দেখা গেল।নেই সেই আগের মত ব্যাস্ততা।
কালিয়াগঞ্জের কুমারটুলির ব্যাস্ততা যেন গ্রাস করে নিয়েছে করোনাসুরের থাবা। হটাৎ করে করোনার প্রকটে যেন মৃৎ শিল্পিদের রুজি রোজগারে বড়সড় আঘাত পড়েছে।কালিয়াগঞ্জের কুমার টুলির বিশিষ্ট মৃৎশিল্পী সুশান্ত পাল এক প্রশ্নের উত্তরে বলেনবিগত বচরগুলিতে কালিয়াগঞ্জের বাইরে থেকে যেমন দুর্গাপুর,হেমতাবাদ,কুশ মন্ডি,কুনোর প্রভৃতি এলাকা থেকে প্রতিমার বরাত পেলেও এখনো পর্যন্ত বাইরের কোন প্রতিমার বরাত কপালে জোটে নাই।আর কালিয়াগঞ্জ শহরের কোন ক্লাবে এবার বড় বাজেটের পূজা হবেনা।
ফলে এবার আমাদের প্রতিমার আয় এক অনিশ্চয়তার জায়গায় পৌঁছে গেছে।মৃৎ শিল্পী সুশান্ত পাল বলেন এতদিন ধরে প্রতিমা তৈরীর কাজের সাথে যুক্ত থাকলেও ২০২০ সালের কথা আমাদের মৃৎশিল্পীদের কাছে ইতিহাস হয়ে থাকবে।এমন চরম দুর্দিনের বাজার আর আগে কখনও দেখিনি আমার জীবনে।পাল পাড়ার কুমার টুলির অপর প্রতিষ্ঠিত মৃৎ শিল্পী বিশ্বনাথ পাল বলেন প্রতিমা তৈরীর বাঁশ, সুতলী, খর,মাটি রঙ এবং সাজসজ্জার জিনিসের দাম বর্তমানে গতবারের তুলনায় দ্বিগুন হয়েছে।কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কালিয়াগঞ্জ সহ আশেপাশের এলাকার ক্লাব গুলি কোন রিস্ক নিচ্ছেনা চাঁদা আদায়ের।কারন এবার যারা চাঁদা দেবে তাদের ব্যবসা লকডাউনের কারনে ছয় মাস ধরে বন্ধ।যে একহাজার চাঁদা দিয়েছিল এবার তার কাছ থেকে দুইশো টাকা চাঁদা আদায় করা কঠিন ব্যাপার হয়ে যাবে।তাই শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্লাব এবার পূজার কোন আতিশয্যে যাবেনা।কোন ভাবে চারদিন পূজা করবে মাত্র।তাই প্রতিমার দাম আমরা কি পাবো তা বুঝতেই পারছি বলে বিশ্বনাথ পাল বলেন।বিশ্বনাথ পাল বলেন এ বছর মা যেমন ভাবে আমাদের মর্তে আসছেন সেই ভাবেই সবাই মায়ের অঞ্জলি দেবে।এবছর মায়ের বরাতের পরিমান নাই বললেই চলে।তিনি বলেন প্রতিমা শিল্পিদের এমন দুরাবস্থা আমরাতো কোনদিন দেখিনি,আমাদের বাপ ঠাকুর্দাও জীবনে কোন দিন দেখেছে বলে শুনিনি।