সংক্রমন বাড়ছে তবুও করোনার লকডাউনে অমানবিক মুখ মালদা শহরে।
1 min readসংক্রমন বাড়ছে তবুও করোনার লকডাউনে অমানবিক মুখ মালদা শহরে।
জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ। চার মাস পেরিয়ে পাঁচ মাসে পদার্পণ করেছে দেশব্যাপী সংক্রমিত আতঙ্কের অদৃশ্য মারণ ভাইরাস করোনা। একদিকে সংক্রমণের আতঙ্ক অপরদিকে অর্থনৈতিক চাপে সর্বস্তরের মানুষ দিশেহারা। সংক্রমন যেভাবে ছড়িয়ে পরছে তাতে সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে রাতের ঘুম যেমন ভাবে উড়ে গেছে তার চেয়েও সাধারণ মানুষের কারণ একদিকে এই অদৃশ্য মারণ ভাইরাসের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ বেঁচে থাকার স্বার্থে এবং অপর দিকে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিভাবে পেট চলবে, সংসার চলবে সেই চিন্তায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে প্রশাসনিক ব্যাক্তিদের দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকলেও মাস শেষে মোটা অঙ্কের মাইনে কিন্তু পেট ও সংসার চালানোর পক্ষে যথেষ্ট যা পরিবারের সদস্যদের রাতে ঘুমের পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু সাধারণ মানুষ !
তাদের কথা এই প্রতিবেদনে তুলে ধরতেই হয়। একদিকে সংক্রমিত হওয়ার দুশ্চিন্তা অপরদিকে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রমে নিজের পেট সহ সংসার চালনা করার দুশ্চিন্তার অমোঘ কালোমেঘ প্রতিটি পরিবারে, প্রতিটি সংসারের উপর জাঁকিয়ে বসেছে। মুখে মাস্ক, সোশ্যাল দূরত্ব, স্যানেটাইজ, লকডাউন ৪টি শব্দ গুচ্ছ এই চারমাসের মধ্যে ধারাপাত এর মতো মানুষ মুখস্থ করে ফেলেছে তবুও তারমধ্যে মিস করে ফেলছে। ফেলাটাই স্বাভাবিক। পকেটে পয়সা, পেটে ভাত, সংসার পরিচালনা কি বিভিষিকার রূপ নিয়েছে তা বর্ণনাতীত। সপ্তাহে ৫ দিন উপচে পরছে ভীড় , জনসমাগম সর্বত্র কোনো হেলদোল নেই সকলের তেমনি প্রশাসনের। আর দুইদিন বৃহস্পতিবার ও শনিবার মনে হচ্ছে করোনা জেগে উঠে। এই দুইদিন নাকি রাশি নক্ষত্র পঞ্জিকা বিচারে করোনা অ্যাক্টিভ হয়ে উঠে। হয়তো তাই। তবে এই দুইদিন কিন্তু করোনা অ্যাক্টিভ এর সাথে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ প্রশাসন অ্যাক্টিভ হয়ে উঠে। এই অ্যাক্টিভ দুই ধরনের- এক মানবিক অ্যাক্টিভ , দুই অমানবিক অ্যাক্টিভ। রাজ্য জুড়ে এই মুহূর্তে দুর্দশাগ্রস্ত, দুশ্চিন্তা আতঙ্কিত রোজগার বিহীন সর্বস্তরের মানুষের পাশে পুলিশ প্রশাসনের মানবিক অ্যাক্টিভ ভীষন প্রয়োজন। এই মুহূর্তে মানসিক ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো একমাত্র লক্ষ্য। তবে সপ্তাহে দুইদিন সচেতন বিহীন মানুষজন যারা নিজের, পরিবারের, সমাজের ক্ষতি করার জন্য প্রশাসনিক নিয়ম কে তোয়াক্কা না করে সদিচ্ছা পূরণ করতে ব্যাস্ত তাদের উপর পুলিশ প্রশাসনের টেকনিক্যাল মানবিক ইমপ্লিমেন্ট এই মুহূর্তে প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন নিয়ম ভঙ্গকারীদের উপর পুলিশ প্রশাসনের টেকনিক্যাল মানবিক ইমপ্লিমেন্ট বজায় থাকলেও মালদা শহরে পুলিশ প্রশাসনের অমানবিক মুখ, অমানবিক অত্যাচারের ছবি যেভাবে সংবাদ মিডিয়ায় ভেসে উঠলো তা অনেকটাই ইংরেজ আমলে নীল চাষীদের উপর অত্যাচারের ছবি ফুটিয়ে তুলেছে। রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার পুলিশদের এটাই কি দায়িত্ব, তাদের নিয়োগ কি এইভাবে দাদাগিরির রোল প্লে করার এই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন মালদা সহ রাজ্যের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিও ফুটেজ। লকডাউনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যদি আইনত বাধ্যতামূলক হয় তবেতো সেই বাধ্যতা সকলের জন্যই তাই না। সেখানে একসাথে এক জায়গায় পুলিশ কর্তাদের সাথে বেশকিছু সিভিক ভলান্টিয়াররা সোশ্যাল দূরত্ব বাধ্যতামূলক আইন ভাঙ্গছেন কিনা এই নিয়েও জনগন সরব হচ্ছে। সবচেয়ে এই মুহূর্তে একজন নাগরিক তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবেই লকডাউন আইন মানছেন না সচেতন হওয়া সত্বেও তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পদ্ধতি আছে কিন্তু যেভাবে মালদার ভিডিও ফুটেজ টিতে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে শুরু করে মহিলা পুলিশ ও পুলিশ আধিকারিকরা নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে যে কদাচিৎ ভাষায়, যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ প্রদর্শনে পিছন থেকে লাথি মেরে লকডাউন আইন কার্যকরী করার পথ বেছে নিলেন তা কিন্তু ইতিমধ্যেই রাজ্যের মানবিক পুলিশ প্রশাসন কে প্রশ্নের মুখে দাড় করিয়ে দিল। ইতিমধ্যেই পঞ্জিকা বিচারে রাশি নক্ষত্র বিচারে বৃহস্পতিবার ও শনিবার রাজ্য জুড়ে ফুল লকডাউন চললেও সপ্তাহে ৫ দিন হাফ-কোয়াটার লকডাউনে উপচে পড়া ভীড়, জনসমাগমে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, কমছে না বরং এর সাথেই দেখা মিলছে অমানবিক সংস্কৃতি।