December 10, 2024

সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা প্রসারে পঁচিশ বছর ধরে লড়ে চলছেন পাঁশকুড়ার চন্ডী বাবু

1 min read
বর্তমান কথা :-  সংস্কৃত ভাষা তাঁর ধ্যান জ্ঞান সেই ছোটবেলা থেকেই।আজ থেকে ঠিক পঁচিশ বছর আগে  সংস্কৃত ভাষায় এলালার ছেলে মেয়েদের জ্ঞানলাভের জন্য সংস্কৃত টোল তৈরী করেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া ব্লকের পুরুল গ্রামের  যুবক চন্ডী চরন মিশ্র।তাঁর মায়ের নামে নাম রাখেন বিমলা দেবী সংস্কৃত বিকাশ কেন্দ্রম। প্রথমে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের সংস্কৃত শিক্ষার জন্য সম্পূর্ন বিনা পারিশ্রমিকে পাঠদান দেওয়া শুরু হয়।ছোট্ট মাটির চালাঘরে রোদ বৃষ্টি ঝঞ্ঝা উপেক্ষা করে দিন রাত শুধুমাত্র সংস্কৃত শিক্ষার প্রসারে লড়াই শুরু করেন।গ্রামের কিছু মানুষ এবং স্ত্রীর সাহচর্য পেয়ে সংস্কৃত শিক্ষার প্রসারে দিনরাত এককরে কাজ করে চলেছেন।বুকে ছিল অনেক আশা আকাঙ্খা।তার এই ছোট্ট সংস্কৃত টোল একটু অন্তঃত সরকারী সহায়তা পাবে।
এই আশায় দিনের পর দিন শিক্ষা দপ্তর থেকে শুরু করে নেতা মন্ত্রীর দোরগোড়ায় ছুটেছেন। ছুটেছপন দিল্লী,কাশী,কোলকাতা কিন্তু সব আশাই নিরাশা করেছে চন্ডী বাবুকে।তিনি শুধু স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেন না,স্থানীয় পাঁশকুড়া,ডেবরা,পিংলা,ঘাটাল,বাগনান ও তমলুক কলেজের ছেলে মেয়েদের তাঁর এই সংস্কৃত টোলে শিক্ষা লাভ করে।এছাড়া দূর্গা পূজোর আগে দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর ব্রাম্ভনদের প্রশিক্ষন দিয়ে থাকেন চন্ডী বাবু।পূজোর সাথে বিজ্ঞানের কতটা সম্পর্ক এবংমন্ত্রপাঠে  সঠিক সংস্কৃত উচ্চোরন করার জন্য এই প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন নিজের উদ্যোগে।প্রতিবছর প্রায় একশো ব্রাম্ভন প্রশিক্ষন দেওয়া হয় এই সংস্কৃত টোল থেকে।চন্ডীবাবু এক কথায় সংস্কৃতে পন্ডিত।এই টোলটির একটু স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রানপন লড়াই করে চলছেন।কিছুবছর আগে স্ত্রীবিয়োগের পর নিজেও দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত।তবুও এই কঠিন অশুখ নিয়েও নেতা মন্ত্রীর দোরগোড়ায় ছুটেচলেছেন।কিন্তু কথা কেউ রাখেনি।বুকে একরাশ যন্ত্রনা নিয়েও হাল ছাড়তে নারাজ।দেখতে দেখতে তার এই প্রতিষ্ঠান শনিবার ২৫ বছরে পদার্পন করলো। ক্ষুদ্র ক্ষমতায় চন্ডীবাবু শনিবার সারাদিন স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।নেতা মন্ত্রী,বিধায়ক অনুষ্ঠানে আসার কথা দিলেও কারোরই পা পড়লোনা।এদিন চোখের জল মুছেও অনুষ্ঠানের মাইকে গলা কাঁপা অবস্থায় অনুষ্ঠানে আসা ছাত্রছাত্রীদের একটাই কথা জানান হাল ছাড়বো না।চেষ্টা কোনদিন ব্যর্থ হয়না।একদিকে ক্যান্সারের সাথে লড়াই অন্যদিকে সংস্কৃত ভালবেসে নিজের সৃষ্টি সংস্কৃত টোলকে বাঁচানো।সবমিলিয়ে ভারতের আদি ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে  আপ্রান চেষ্টাচালিয়ে যাচ্ছেন পাঁশকুড়া ব্লকের পুরুল গ্রামের  সংস্কৃতের এই পন্ডিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *