দার্জিলিংয়ে সরস মেলায় তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি করে রেকর্ড উত্তর দিনাজপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের।
1 min readদার্জিলিংয়ে সরস মেলায় তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি করে রেকর্ড উত্তর দিনাজপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের।
দু-চার কুইন্টাল নয়। দার্জিলিংয়ে সদ্যসমাপ্ত সরস মেলায় ৬০ কুইন্টাল তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি করে রেকর্ড উত্তর দিনাজপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের। আয়োজকদের কাছ থেকে তাঁরা পেলেন সর্বাধিক বিক্রি করার সম্মান। বাড়তি পাওনা মেলা চলাকালীন তুলাইপাঞ্জির ভূয়সী প্রশংসা করে গিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সাফল্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের পাশাপাশি উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসনও।প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১৩ থেকে ২৪ নভেম্বর দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় ম্যালে সরস মেলায় শতাধিক স্টল ছিল। সেখানে বরাদ্দ চারটি স্টলে জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সাতজন আর্টিসন অংশ নেন। এর মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের অন্যতম ফসল তুলাইপাঞ্জিও স্থান পায়। দফায় দফায় ৬০ কুইন্টাল তুলাইপাঞ্জি বিক্রি হয় ৮ লক্ষ টাকায়।
স্বাদে ও সুগন্ধে ভরা তুলাইপাঞ্জির সুখ্যাতি অনেক আগেই জেলার সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছেছে। রয়েছে জিআই ট্যাগও। কৃষি দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয় তুলাইপাঞ্জি। উত্তর দিনাজপুরের মোহিনীগঞ্জ, বিহোর, ভগিলতা, রুনিয়া, মছলন্দপুর গ্রাম সহ কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার, রায়গঞ্জের ব্লকের কিছু জায়গায় মূলত এর চাষ হয়। স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, কাঞ্চন নদীর উপকূলবর্তী জায়গায় হওয়া তুলাইপাঞ্জির স্বাদ ও সুগন্ধ অতুলনীয় হয়। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তুলাইপাঞ্জি ছাড়াও দার্জিলিংয়ে আয়োজিত সরস মেলায় জেলা থেকে গিয়েছিল জেলার গর্ব হিসেবে পরিচিত বেশকয়েকটি সামগ্রী। যেমন গোয়ালপোখর-১ ব্লকের উৎকৃষ্ট হলুদ, চোপড়ার মাশরুমের আচারের পাশাপাশি ছিল ডালের বড়ি, বাঁশ ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন গৃহসজ্জার সামগ্রী, কালিয়াগঞ্জের মালগাঁও এলাকার হাতে তৈরি কার্পেট। সব মিলিয়ে জেলার স্টলগুলি থেকে বিক্রি হয়েছে ১৩ লাখ টাকার সামগ্রী। এর মধ্যে শুধু ৮ লাখ টাকার তুলাইপাঞ্জি চাল ছিল।জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে চাঙ্গা রাখতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। লাগাতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শিল্প সামগ্রী প্রস্তুত ও তার বিপণন নিয়ে বছরভর কাজ হয়। সেজন্যই এই সাফল্য এসেছে। ৮ লাখ টাকার তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি হওয়া বড় পাওনা। জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার প্রকল্প অধিকর্তা হেমন্ত সেওয়ার কথায়, জেলার সাতজন আর্টিসন দার্জিলিংয়ের ওই মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে মহারাজা মা এসএইচজি মহিলা দলটি ‘লো প্রাইস রেঞ্জ প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি’তে সর্বাধিক বিক্রির জন্য প্রথম স্থান পেয়েছে। দলের টুম্পা সাহা শীল আয়োজকদের দেওয়া পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা ছিল জেলা আনন্দধারার কো-অর্ডিনেটর দিব্যেন্দু ঠাকুরের। আমাদের বড় পাওনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার স্টলে এসে তুলাইপাঞ্জি চালের সুখ্যাতি করেছেন। এতে শীতকালে বিভিন্ন মেলায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বাড়তি উদ্যোগ নেবে।