December 24, 2024

কোথায় হবে পাড়ায় শিক্ষালয়ের ‘ক্লাস’, কারা পড়াবেন? জেনে নিন খুঁটিনাটি

1 min read

কোথায় হবে পাড়ায় শিক্ষালয়ের ‘ক্লাস’, কারা পড়াবেন? জেনে নিন খুঁটিনাটি

কলকাতা :  মাঝে বার কয়েক স্কুলগুলিকে আংশিকভাবে খোলা হলেও, তা বেশিদিন খুলে রাখা যায়নি। করোনার বাড়বাড়ন্তের ফলে আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল।প্রায় দুই বছর হতে চলল। কোভিড আবহে বন্ধ রয়েছে স্কুল। এই সময়ে পড়ুয়াদের ভরসা ছিল একমাত্র অনলাইন ক্লাস। কিন্তু তাতেও সমস্যা।অনেকের কাছেই স্মার্টফোন নেই, আবার অনেকের ফোন থাকলেও নেটওয়ার্কের সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের পড়ুয়াদের কথা ভেবে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রকল্প। প্রকল্পের নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা, পড়া ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে নাচ, গান, আবৃত্তির মতো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হবে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়ে’। পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হবে রাজ্যের ৬০ লাখেরও বেশি পড়ুয়া।

 

কেন এই প্রকল্প?

করোনায় স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাব যাতে পড়ুয়াদের উপর না পড়ে, তা নিশ্চিত করেই পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। বিশেষ করে ছোট ছোট পড়ুয়াদের যাতে ক্লাসরুমের সমতুল্য কোনও একটা মুক্ত পরিবেশ দেওয়া যায়, যেখানে তারা সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, খেলতে পারবে, এমন পরিবেশ তৈরি করতেই এই ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’-এর ভাবনা।

প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় পর্যাপ্ত শিক্ষক দেওয়া যাবে?

রাজ্যে বর্তমানে শিক্ষকের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে ঠিকই। তবে এই সমস্যার মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যেই একটি নীলনকশা তৈরি করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ২ লাখেরও বেশি শিক্ষক থাকবেন পড়ুয়াদের জন্য। এর জন্য প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক, প্রাথমিক স্তরের প্যারা টিচার, সহায়ক – সহায়িকাদেরও ব্যবহার করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন এনজিও কর্মীদের ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও ব্যবহার করা হতে পারে এই প্রকল্পের আওতায়। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাব পড়ুয়াদের মনোসংযোগের উপর পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণে, একটি ক্লাসের জন্য একাধিক পড়ুয়াও রাখা হতে পারে। যাতে পড়ুয়াদের উপর আরও বেশি করে নজর দেওয়া যায়।

পঞ্চায়েত ও পুরসভার ভূমিকা কী থাকবে?

এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পে। বিশেষ করে পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পটি কোথায় হবে, তেমন খোলামেলা জায়গা খুঁজে বের করার দায়িত্ব পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলি। গাইডলাইন অনুযায়ী, যে জায়গাটিকে পাড়ায় শিক্ষালয় হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, সেটির উপরে গরম কালের জন্য একটি ছাউনি থাকতে হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত পানীয় জল ও নিকাশির ব্যবস্থাও রাখতে হবে।

বেসরকারি স্কুলগুলির জন্য কী বার্তা দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী?

পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পের আওতায় মূলত রাজ্যের সরকারি ও আধা সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলি এবং শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলিকে রাখা হয়েছে। বেসরকারি স্কুলগুলির জন্য কোনও নির্দেশিকা রাজ্যের পক্ষে জারি করা সম্ভব নয়। তবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, কোনও বেসরকারি স্কুল যদি এই ধরনের উদ্যোগ চালু করতে চায়, তাহলে রাজ্যের তরফে যা যা সাহায্য করার সম্ভব তা করা হবে।

কারা কারা পাবে পাড়ায় শিক্ষালয়ের সুবিধা?

রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প আপাতত প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে শুরু করা হচ্ছে। প্রি প্রাইমারি থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্পের সুবিধা পাবে। সোমবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন রাজ্যের ৫০ হাজার ১৫৯টিরও বেশি প্রাথমিক স্কুল এবং ১৫ হাজারেরও বেশি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়া এর সুবিধা পাবে।

কোথায় কোথায় চলবে পাড়ায় শিক্ষালয় ?

রাজ্যের প্রতিটি পাড়ায় এই নতুন ধরনের মুক্তাঙ্গনের শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবে রাজ্য সরকার। মূলত সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্যই এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। রবিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিন বাদে বাকি প্রত্যেকদিনই চলবে এই পাড়ায় শিক্ষালয়। অর্থাত্‍, গোটা ক্লাসরুম ব্যবস্থাটিকে স্কুলের বদ্ধ পরিবেশের বাইরে খোলা জায়গায় নিয়ে আসার একটি উদ্যোগ। কোনও একটি পাড়ার একই ক্লাসের পড়ুয়াদের একসঙ্গে পড়ানো হবে। প্রতিটি ক্লাসের জন্য পৃথক পৃথক সময়ও নির্ধারণ করা হতে পারে।

কোভিড বিধি মানা সম্ভব হবে?

ক্লাসরুমের বাইরে খোলা জায়গায় পঠনপাঠনের একটি মূল উদ্দেশ্য হল কোভিড থেকে পড়ুয়াদের সুরক্ষিত রাখা। সেই কারণেই মুক্তাঙ্গনে পড়ানোর সিদ্ধান্ত। তাই এক্ষেত্রে কোভিড বিধি যাতে সঠিকভাবে পালন করা যায়, তা নিশ্চিত করতে তত্‍পর শিক্ষা দফতর। শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা, মাস্ক পরা, স্যানিটাইজেশনের ব্যবহার প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *