কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরূদ্ধে আটসাট বেঁধে বিজেপি ভোটের আসরে নামতে চলেছে
1 min readকালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরূদ্ধে আটসাট বেঁধে বিজেপি ভোটের আসরে নামতে চলেছে
তপন চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ,২৫ ডিসেম্বর:কলকাতা পৌর নিগমের নির্বাচন শেষ হতে না হতেই রাজ্যের বিভিন্ন পৌর সভার যেগুলির সময় দীর্ঘ দিন শেষ হয়ে গেছে যেগুলিতে প্রসাশক নিযুক্ত করে জোড়াতালি দিয়ে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে সেই পৌর সভা গুলির ভোট আসন্ন।যার প্রস্তাবিত ভোটের তারিখ আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি হবার কথা।উত্তর দিনাজপুর জেলায় যার মধ্যে আছে কালিয়াগঞ্জ,ডালখোলা এবং ইসলামপুর পৌর সভা।গত বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত তারিখ ঘোষণা করতেই জেলার তিনটি পৌরসভার রাজনৈতিক দলগুলির নেতারা ভোটের আসরে নেমে পড়েছে নিজ নিজ এলাকায় গুটি সাজাতে।কালিয়াগঞ্জ পৌর শহরে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপির সাথে সাথে কংগ্রেস এবং বামেরাও বসে নেই।শুরু হয়ে গেছে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে কে কোন ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হবে তার প্ৰথমিক হিসাব নিকাশ।জানা যায় কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার বিগত নির্বাচন গুলিতে কংগ্রেস দীর্ঘ২২ বছর ধরে একটানা রাজত্ব করে আসছিল কালিয়াগঞ্জের প্রয়াত প্রাক্তন পৌর পিতা অরুণ দে সরকারের নেতৃত্বে।কিন্তূ কংগ্রেস শেষ রক্ষা করতে পারেনি।তীরে এসে কংগ্রেসের তরীকে গত ২০১৭সালে কংগ্রেসের কিছু নির্বাচিত কমিশনারগন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়ে কালিয়াগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে দলবদল করে তৃণমূলের পৌর বোর্ড গঠন করে।যার নীতৃত্বে ছিলেন কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার ৮নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল দলে যাওয়া কমিশনার কার্তিক চন্দ্র পাল।
পরবর্তীতে কার্তিক চন্দ্র পাল কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেই কালিয়াগঞ্জ শহরের সার্বিক উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়েন।তিনি দায়িত্ব ভার নিয়েই অনুন্নত কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করে অতি অল্প দিনের মধ্যেই কালিয়াগঞ্জের রূপকারের তকমা পেয়ে যান। বিগত দিনে কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস পরিচালিত পৌর সভা শহরের যা উন্নয়নে করতে পারেনি কার্তিক পাল সেই কাজ দায়িত্বভার গ্রহণের দুই বছরের মধ্যে শহরের ব্যাপক উন্নয়ন করতে সমর্থ হয়েছেন। ঝাঁ চকচকে রাস্তা,রাস্তায় ডিভাইডার,শহরের মূল রাস্তা কালিয়াগঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের দুই ধারে বৈদ্যুতিক আলো ডবল লেনের রাস্তা, শেঠ কলোনির পীড় পুকুর মোড় থেকে ধনকোল হাট হয়ে হরিহরপুর ডবল লেনের রাস্তা,কালিয়াগঞ্জের হাসপাতাল মোড় থেকে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল বিবেকানন্দ মোড় থেকে শিমুল তলা রাস্তা চওড়ার সাথে দুইধারে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা সম্পুর্ন করেছেন।
প্রাক্তন পৌর পিতা কার্তিক পাল রাজ্য সরকারের পরিবহন দপ্তরের কাছ থেকে অর্থ এনে নুতন উন্নতমানের বাসটার্মিনাস কালিয়াগঞ্জের শহরের মানুষদের উপহার দিয়েছেন।এসব করার পরেও তৃণমূল দলের কিছু নেতার সাথে কার্তিক পালের বিবাদ শুরু হয়ে যায়।তৃণমূলের মধ্যে বিবাদ এতটাই চরম পর্যায়ে চলে যায় বাধ্য হয়ে প্রাক্তন পৌর পিতা তথা কালিয়াগঞ্জের উন্নয়নের কান্ডারীকে তৃণমূল দল থেকে বিজেপি দলে চলে যেতে হয় বাধ্য হয়ে।বর্তমানে কার্তিক পাল বিজেপি দলের মধ্যে থাকলেও সেই ভাবে বিজেপির দলীয় কার্যকলাপের সাথে যুক্ত থাকতে দেখা যায়না।কিন্তু ভোট বড় বালাই।তাই কার্তিক পাল ভোটের সময় হাত পা গুটিয়ে থাকবে এটাও মনে করার কোন কারন নেই।তবে কালিয়াগঞ্জ শহরের উন্নয়নের জন্য কার্তিক পালের মত একজন ডাইনামিক নেতার যে এই মুহূর্তে ভীষণ প্রয়োজন তা কালিয়াগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ এক বাক্যে স্বীকার আগেও করেছে এখনো সবসময় করে আসছে।অনেকেই মনে করছে কার্তিক পাল বিজেপির হয়ে ভোটে লড়লে ভোটে নিশ্চিত ভাবেই বিজেপি ভালো আসন পাবেই একথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।কালিয়াগঞ্জের মানুষকে এও বলতে শোনা যাচ্ছে উমনয়নের কান্ডারি কার্তিক পাল যে রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়বে সেই দলই যে আগামী পৌর নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জের ক্ষমতা দখল করবে তা কালিয়াগঞ্জ শহরের মানুষই শুধু নয় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব থেকে রাজ্যের তৃণমূলের অনেক নেতৃত্বরাও খবর রাখে।
তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বরা এও জানে তৃণমূল বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ পৌর সভা যে ভাবে দখল করে আছে তা একরকম কাকের বাসায় কোকিলের ডিম পাড়ার মত ঘটনা।তৃণমূলকে এবার কালিয়াগঞ্জ শহরের মানুষের ভোট পেয়ে পৌর সভা দখল করতে হবে যা একদম সহজ ব্যাপার নয়।তা ছাড়া তৃণমূলের সেই ডাইনামিক নেতৃত্ব নেই যে নেতৃত্ব কার্তিক পালকে টক্কর দেবার মত ক্ষমতা রাখে।বর্তমানে যারা পৌর সভার প্রসাশক এবং উপ পৌর প্রসাশক দায়িত্ব নিয়ে পৌর সভায় বসেছেন তাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারনা অত্যন্ত খারাপ।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার ইতিহাসে যে ঘটনা কোন দিন ঘটেনি সেইসব ঘটনা হামেশাই ঘটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।ফলে তাদের ভাবমূর্তি কালিয়াগঞ্জের পৌর শহরের নাগরিকদের কাছে একদম তলানিতে বলা যায়।তাদের দাম্ভিকতা,অহংকার এমন পর্যায়ে চলে গেছে এরা মানুষকে মানুষই মনে করেনা।
এমনও ঘটনা তৃণমূলের কিছু নেতাকে অবাক হয়ে নলতে হয় বর্তমান পৌর প্রসাশক এবং উপ-পৌর প্রসাশককে বলতে শোনা যায় তারা নাকি জনগণের চেয়েও অনেক উপরে তাদের স্থান।
কিছু কর্মীদের মধ্যে এসব আলোচনা হওয়া থেকেই তা জানা যায়। অনেক পৌর বাসীকে বলতে শোনা যাচ্ছে যাদের জনগণের কথা শোনার মত ধৈর্য নেই,পৌর সভায় সমস্যার কথা বলতে গেলে পৌর নাগরিকদের গ্রেপ্তার হতে হয় অথবা চাকরিতে অবৈধ উপায়ে ছেদ ঘটাতে পারে তাদের উপর কি ভাবে মানুষ ভরসা রাখতে পারে?শুধু কালিয়াগঞ্জের মানুষই প্রাক্তন পৌর পিতা কার্তিক পালের উন্নয়নের গুনগান করেন না।কালিয়াগঞ্জের আট থেকে আশি বছরের সব নাগরিকদের বলতে শোনা যায় কার্তিক পাল ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই এত দ্রুত কালিয়াগঞ্জের উন্নয়ন করা।
বর্তমান তৃণমূলের বিধায়ক দৌমেন রায় যিনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে ফালাকাটা থেকে এসে কালিয়াগঞ্জে জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন তার কিং মেকারও ছিলেন স্বয়ং সেই কার্তিক পাল।উইদাউট কার্তিক পাল সৌমেন রায়ের বিধায়ক হবার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেত।কিন্তু মানুষের একটা বড় দোষ কাজ ফুরালেই কেও কাউকে মনে রাখার দায়িত্ব ও কর্তব্য অতি সহজেই যেন ভুলে যেতে বসে।সৌমেন রায় মানুষের রায়কে অবমাননা করে তিনি তৃণমূল দলে চলে গেছেন।
।তাই বর্তমানে কার্তিক পাল যে দলেই থাকবে সেই দলের কিং মেকারের ভূমিকা পালন আগেও করেছে আসছে পৌর ভোটেও তাকেই হয়তোবা করতে হবে।আর কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার কথা বলছেন?এই পৌর সভায় পাঁচ জন প্রশাসকের সংসারে সদস্যকে নিয়েই সংসার করতে পারেন বর্তমান পৌর প্রসাশক।আসলে ঝরে বগ মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে।বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ পৌর সভায় এই ভাবেই কদিনের জন্য দায়িত্ব পেয়ে তারা ভুলেই গেছে তারা বুঝি এই দায়িত্বে সারা জীবন থেকে যাবে পৌর প্রসাশক বা উপ পৌর প্রসাশক হয়েই।তারা আর যাই হোক পৌর সভা নির্বাচনে ভাবি চেয়ারম্যানের মুখ হয়ে লড়াই করবার যোগ্যতা তাদের সামান্যটুকুও নেই।তবে আগাম কিছুটা অভ্যাস দেওয়া যেতেই পারে এবার লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে।
এবার কিন্তূ কালিয়াগঞ্জের মানুষ সেই মানুষকে ভোট দেবেন যে মানুষের দ্বারা কালিয়াগঞ্জের মানুষেরা যেমন উপকৃত হয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও যে কোন সমস্যার সমাধান নিমেষের মধ্যে পেয়ে উপকৃত হতে পারবেন।অন্য দিকে কালিয়াগঞ্জের জাতীয় বণগ্রেস এবং বাম দল এখনো তাদের ভোটে লড়াইয়ের রসায়ন কেমন হবে তার উপর নির্ভর করবে বলে জানা যায়।
যদিও বাম ও কংগ্রেস এক জোট হয়েই লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে এবারের নির্বাচন যে তৃণমূলের কাছে সন্মান ধরে রাখার লড়াই তা খুব ভালো ভাবেই তৃণমূলের নেতৃত্বরা জানেন।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার লড়াই জোরদারের দিকেই এগোচ্ছে বলে জানা যায়।