উত্তর গোবন্দপুরে ডাইনি অপবাদে প্রচন্ড মারের পর প্রানের ভয়ে বাবা ও ছেলে গ্রাম ছাড়া,পুলিশের সাহায্য না পাবার অভিযোগ-
1 min readউত্তর গোবন্দপুরে ডাইনি অপবাদে প্রচন্ড মারের পর প্রানের ভয়ে বাবা ও ছেলে গ্রাম ছাড়া,পুলিশের সাহায্য না পাবার অভিযোগ-
তপন চক্রবর্তী,৯ নভেম্বর:উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের উত্তর গোবিন্দপুরের দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা নলিনী মোহন রায়কে গ্রামবাসীরা ডাইনি সন্দেহে রাতে বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে প্রচন্ড মারের পর মেরে ফেলার হুমকি দিলেপ্রাণ বাঁচাতে অবশেষে বাবা নলিনী রায় ও ছেলে বিশ্বজিৎ রায় দুজনেই দুইদিন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানা যায়।খবর নিয়ে জানা যায় দুবছর আগে উত্তর গোবিন্দ পুরের ১৬ বছরের বিথিকা রায় গলায় দড়ি লাগিয়ে মারা যায় স্বল্প বয়সে প্রেম ঘটিত কোন এক কারনে।দুই বছর চলে যাবার পর মৃতা বিথিকার মার হটাৎ করে ভর উঠলে সে বলে দেয় তার মেয়ের মৃত্যুর জন্য নাকী গ্রামের গোসাই বাবাজি নলিনী রায়ই নাকি দায়ী।এই ডাইনির জন্যই তার মেয়ে গলায় দড়ি লাগিয়ে মারা যায়।
গত ৭ই নভেম্বর রাতে যখন নলিনী রায় উত্তর গোবিন্দপুরের তার নিজের বাড়িতে প্রতিদিনের মত খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিল।হটাৎ করে ১০থেকে ১৫ জন গ্রামবাসী নলিনী রায়ের বাড়িতে রাতে চড়াও হয়ে তার ঘরের দরজা ভেঙে বিছানা থেকে টানতে টানতে ঘরের বাইরে বের করে প্রচন্ড প্রহার করতে শুরু করে।প্রহারকারীরা শুধু নলিনী রায়কে মেরেই থেমে থাকেনি তার ছেলে বিশ্বজিৎ রায় ও তার স্ত্রী শম্পা রায় বাধা দিতে গেলে তাদেরকেও প্রচন্ড ভাবে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে ছেলে বিশ্বজিতের চোখে ও হাতে প্রচন্ড আঘাত লাগে।বাড়ির লোকেরা সেই সময় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে বেশ কিছু গ্রামবাসি ছুটে আসতে দেখলে দুষ্কৃতিকারীরা তা বুঝতে পেরে পালিয়ে যায়।
রাতেই বাবা ও ছেলে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা তাদের করা হয়।নলিনী রায়ের স্ত্রী সরলা রায় পরের দিন কালিয়াগঞ্জ থানায় গিয়ে তার স্বামী সহ তার ছেলেকে যারা অন্যায় ভাবে ডাইনি অপবাদ দিয়ে রাতে বাড়ির মধ্যে গিয়ে মারপিট করে আসছে সেই সব দূষকৃতিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে দাবি জানিয়ে বলেন তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে।তাছাড়া তারস্বামী ও ছেলে প্রাণ ভয়ে গ্রামে আসতে পারছেনা।তাদের আসার ব্যবস্থ্যা পুলিশকেই নিতে হবে।
নলিনী রায়ের জামাই এক সাক্ষাৎকারে বলেন প্রাণ নাশের হুমকি যারা তার শ্বশুরকে দিলেন সেই সব দুস্ক্রীতিকারীরাও কালিয়াগঞ্জ থানায় গিয়ে কিসের ভিত্তিতে আমার নিরপরাধ শ্বশুর মশায়ের বিরুদ্ধে ডাইরি করতে পারে।তবে জানা গেছে ডাইনি অপবাদ দেবার সথে যুক্ত যারা, তারা নাকি সাশক দলের বছত্র ছায়ায় অপরাধ করেও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
শুধু তাই নয় থানার মধ্যেই।ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।যদিও থানা থেকে দূষকৃতিদের বিরুদ্ধে কোন রকম পদক্ষেপ আজও গ্রহণ করা হয়নি।জানা যায় তারা থানার উপর
ভরসা করেই বসে নেই মঙ্গলবার ডাইনি অপবাদকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি ও ন্যায় বিচারের আশায় রায়গঞ্জ সি জে এম কোর্টে আইনজীবি অশোক বন্ধু লাহিড়ীর মাধ্যমে ৩৮৬,৩৮৭,৩০৭,৩২৩,৩৬৪(এ) ৩৬৫ এবং১২০(বি) ধারায় মামলা রুজু করতে চলেছেন আগামী পরশু বৃহস্পতিবার বলে জানালেন আইনজীবি অশোক বন্ধু লাহিড়ী। তিনি বলেন ডাইনি অপবাদ দিয়ে ভালো মানুষদের নিয়ে যা খুশি এক শ্রেণীর মানুষ নিজেদের ইচ্ছামত করে যাবে তা কোন ভাবেই সভ্য সমাজে ভাবাই যায়নাজানা যায় রাজ্য সরকার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ডাইনি অপবাদের বিরুদ্ধে অনেক সচেতনতা শিবির গ্রামে গঞ্জে করলেও গ্রামে গঞ্জের মানুষ আগে যেখানে ছিল বর্তমানেও সেখানেই আছে।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ডাইনি অপবাদের ঘটনা শুধুদেখলেই তা পরিষ্কার বোঝা যায় বলে অনেকেই মনে করে।