December 28, 2024

বিদেশী ফসল জুকিনির চাষে অধিক লাভ

1 min read

বিদেশী ফসল জুকিনির চাষে অধিক লাভ

তপন চক্রবর্তী-বিদেশি ফসল জুকিনি একটি কুমড়ো জাতীয় ফসল।যার আদি উৎস হল সুদূর আমেরিক। এই ফসলটি অপরিনত অবস্থায় স্যালাড হিসাবে খাওয়া হয়।এর মধ্যে অধিক পরিমান এ ও সি ভিটামিন থাকে। ছাড়াও থাকে খনিজ লবণ,ক্যালসিয়াম ও আয়রন। এই ফসলটি সাধারণত ১৫-২৫ সেন্টিমিটার তাপমাত্রায় ভালো ফলন দেয়।এই জুকিনি নামক ফসলটি গ্রীষ্মকালেও চাষ করা যায়।তবে গ্রীষ্ম কালে পুরুষ ফুলের সংখ্যা বেশি হবার ফলে ফসলের পরিমান কম হয়।পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জুকিনি নামক ফসলের চাষ কি ভাবে চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায় এ ব্যাপারে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্দ্যান পালন বিভাগের

বিষয় বস্তু বিশেষজ্ঞ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন তারা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মাধ্যমে এই চাষের প্রশিক্ষণ নিয়মিত দিচ্ছেন। কি ভাবে এই চাষ বৃদ্ধি করে চাষিরা দুটো পয়সা রোজগার করতে পারে সেই লক্ষের দিকে তাকিয়ে।সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন জুকিনি চাষ করতে গেলে মাটি,সার প্রয়োগ, জলসেচ এবং পোকার হাত থেকে এই ফসলকে বাঁচাতে গেলে কি কি করনীয় তা বিস্তারিত ভাবে জানান।মাটি:- উপযুক্ত জৈব সার যুক্ত আম্লিক বেলে দোয়াশ মাটি এই ফসলের জন্য উপযুক্ত।জাত;-সবুজ ও হলুদ রঙের বিভিন্ন জাত আছে।

সাধারণত এফ-1 হাই ব্রিড জাত গুলো ভালো ফলন দেয়। সবুজ এফ-1 জাত গুলো হাল সেকেন্ড চ্যাম্পিয়ন,কে এস পি-১১৭, বেগম ইত্যাদি।হলুদ জাত গুলির মধ্যে কে এস পি-১৬ ও হেনা উল্লেখযোগ্য।তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ান গ্রীন,পুশা অলঙ্কার জাত গুলি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।বপন পদ্বতি:-বীজ মূল জমিতে সরাসরি বপন করা হয়।১-১-৫ প্রস্থ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ১৫-২০সেমি উঁচু করে বেড তৈরি করে বীজ বপন করতে হয়।সারি থেকে সারি ও গাছ থেকে গাছ যথাকর্মে ১-১-৫ মি ও ৪৫-৬০ সেমি দূরত্ব।বজায় রাখতে হবে বলে জানান। বীজ বপন করার পর অবশ্যই মাটি ঘর অথবা প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মালচিঙ না করলে মাটির সংস্পর্ষে ফল নষ্ট হয়ে যাবে।

বিঘা প্ৰতি ৩৫ শতক জমিতে ৩০০-৪০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।সার প্রয়োগ:- দুই টন পচা গোবর সার ও ১৬ কেজি নাই ট্রোজেন (৩৫ কেজি ইউরিয়া),১০-৬ কেজি ফসফরাস,(৬৬ কেজি এস এস পি) ও ১০- ৬ কেজি পটাসিয়াম ও ১৮ কেজি মিউরেট অফ পটাশ প্রয়োগ করতে হবে।মূল সার হিসাবে অর্ধেক নাইট্রোজেন ও অর্ধেক পটাসিয়াম ও ফসফরাস দিতে হবে জমি তৈরি করবার সময়।অবশিষ্ট সার সমান দুই ভাগে ৩০ ০ ৫০ দিন পর পর চাপান হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে।প্রয়োজন অনুযায়ী দ্বিতীয় চাপানের সময় অনুখাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। জলসেচ:-মাটির আদ্রতা অনুযায়ী জল সেচ প্রয়োগ করতে হব এই ফসলের জন্য নালা পদ্বতিতে জল সেচ দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।জমিতে যাতে জল দাঁড়িয়ে ফসলের ক্ষতি নস করতে পারে।ফসল তোলা:– সাধারণত ৬০ দিন পর ফল্ ধরতে শুরু করে। চক চকে নরম অবস্থায় দুইদিন পর পর ফসল তুলতে হবে।

ফলন:- বিঘা প্ৰতি ৩০-৪০ কুইন্টাল জুকিনি ফল পাওয়া যায়। পোকার আক্রমণ:-জুকিনি মোজাইক ভাইরাস ও ফল ছিদ্রকারী পোকা এই ফসলের প্রধান শত্রু।বলেন ভাইরাস আক্রান্ত গাছ গুলিকে সঙ্গে সঙ্গে তুলে মাটির ভেতর পুঁতে ফেলতে হবে।

 

ফল ছিদ্রকারী পোকা থেকে রক্ষা করতে হলে ফেরোমন ফাঁদ অথবা বিষটপ ঔষুধ ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে বলে জানালেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্দ্যান পালন বিভাগের বিষয় বস্তুবিশেষজ্ঞ সিদ্দিকুল ইসলাম।

জুকিনি ফসলের দাম চাষিরা কেমন পাচ্ছেন এক প্রশ্নের উত্তরে সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন যেহেতু এই ফসলটি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে একদমই নুতন তাই চাষীরা প্রাথমিক অবস্থায় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর..