নিজেদের স্বনির্ভর করতে পুযালতুর গ্রামের মহিলাদের একমাত্র ভরসাই গাঁদা ফুল চাষ।
পিযা গুপ্তা উত্তর দিনাজপুর মানুষের সৌন্দর্যবোধের চিরন্তন ধারণার মধ্যে প্রথম চিত্রকল্প টি হল ফুল। নন্দনতত্ত্ব ও ভালবাসার প্রধান প্রতীক ও ফুল। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ হয়তো পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না। বিগত দিনে ফুল মানুষের মনের খিদে মিটালো এখন ফুল অনেকেরই পেটের খিদে মেটাচ্ছে।।আর বিশেষ কোনো দিনে তো এর প্রযোজনীয়তার কথা বলে শেষ করা যাবে না।ঘর সাজানো থেকে শুরু করে দেবতার পাযে অর্পণ কিংবা মহিলাদের মাথায শোভা বর্ধনেই হোক সবকিছুতেই এর জুড়ি মেলা ভার।তবে ফুলেদের মধ্যে সব থেকে জরুরি হলো গাঁদা ফুল।এই ফুল এখন সব ঋতু তেই দেখা মেলে।এর দাম ও নাগালের মধ্যে হওযায এর চাহিদা দা ও অন্যান্য ফুলের তুলনায় অনেক বেশি ।
তাই গাঁদা ফুল চাষ হচ্ছে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কোণায় কোনায় ।তার মধ্যে একটি হলো উত্তর দিনাজপুরের পুযালতুর গ্রাম ।এই গ্রামের সকলের রুটিরোজগারের একমাত্র পন্থাই হলো গাঁদা ফুল চাষ।
বিঘার পর বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষ করছেন এখানকার কৃষক রা ।বাডির মহিলারা ও এখানে পিছিযে নেই ।নিজেদের স্বনির্ভর করে তুলতে বাড়ির পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা ও একত্রিত হযে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাঁদা ফুলের মালা গাঁথতে বসে যান।
শুধুমাত্র সামান্য পুঁজির আশায় ।মহিলারা জানান জমি থেকে ফুল তুলে তারা এই মালা তৈরি করেন।এক-একটি মালা তৈরিতে তাদের ৫-৭ টাকা লাভ হয।তারপর এই মালা গুলো মালিক দের কাছে বিক্রি করেন।সেখান থেকে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে চলে যায তাদের এই মালা।
মহিলার আরও জানান সারা বছর সামান্য রোজগার হলেও বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে তাদের রোজগারের পরিমাণ ও বেড়ে যায।পুরো গ্রাম জুড়ে তাদের রুটিরোজগারের একমাত্র ভরসাই হলো গাঁদা ফুল চাষ।তারা জানান আগামী দিনে যাতে তাদের এই ব্যবসা ধরে রাখতে কিছু সরকারি সাহায্য মিলে তবে হযতো তাদের এই ব্যবসা আরোও এগিযে যাবে।জানা য়ায় এখানকার ফুল শুধু জেলায় নয় জেলা ছাড়িয়ে এখন বাইরের রাজ্যেও যাচ্ছে।
ফুল চাষ ই এখানকার মানুষ দের রুটি রুজির এক মাত্র হাতিয়ার। তাই ফুল চাষ কে কেন্দ্র করে এখানকার প্রতিটি বাডির অথনিতি গরে উঠেছে।তাই এখন রায়গঞ্জ ব্লকের পুয়াল তর গ্রাম ফুল নগরিতে পরিনত হয়েছে।যে দিকে তাকালেই দেখা যাবে শুধু ফুল আর ফুল।এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো বাড়ির গৃহিণীরা দিনরাত জমি থেকে ফুল তোলার পর সেগুলো বাড়িতে একদিকে যেমন তারা বুনে গাঁদা ফুলের মালা তেমনি বাড়ির পুরুষরা গাঁদা ফুল এবং তার মালা নিয়ে ভোর হতে না হতেই কালিয়াগঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে যায় হাটে বাজারে বিক্রি করতে। এমন কয়েকজন ফুল বিক্রেতাকে দেখা গেল তাদের মধ্যে অন্যতম পুযালতুর এর বুড়িপুকুর এর বাসিন্দা প্রশান্ত মন্ডল, হাট কালিয়াগঞ্জ এর পরিমল সরকার, সাহেব ঘাটা রাঁধুনি পাড়ার সুষেন মন্ডল। তাদেরকে দেখা গেল ভোর বেলায় মহেন্দ্রগঞ্জ এ বাজারে বসে গাঁদা ফুল ও ফুলের মালা বিক্রি করতে।ধান, গম, পাট, সরিষা কিংবা অন্য গতানুগতিক চাষের পাশাপাশি এবার গাঁদা ফুল চাষে নতুন দিগন্ত খুলে দিলেন উত্তর দিনাজপুরের কৃষকরা। কিছু দিন আগে অব্দি এই চাষ হত শুধু মাত্র পুযালতুর এ। এখন তা ধীরে ধীরে গোটা জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পরেছে ।প্রথম অবস্থায়, গাঁদা ফুলের চাষ করে সফল হয়েছেন বেশ কয়েকজন কৃষক। আগামী দিনেও তাঁরা এই ফুল চাষ করতে চান বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।