October 24, 2024

ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের নেতৃত্বে ইটাহারের চেহারা আজ আমূল বদলে গেছে।

1 min read

ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের নেতৃত্বে ইটাহারের  চেহারা আজ আমূল বদলে গেছে।

তনময় চক্রবর্তী। উন্নয়নমূলক কাজ কিভাবে করতে হয় তা শিখেছি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ,শিখেছি দলের কাছ থেকে, শিখেছি দলের যারা প্রতিষ্ঠাতা সময়কার  সৈনিক ছিল তাদের কাছ থেকে, সর্বোপরি দলের নেত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী  মমতা ব্যানার্জির কাছ থেকে। তাই মানুষের পাশে থেকে মানুষের উন্নয়ন করতে পেরেছি আজ । উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেন ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য। তিনি বলেন যখন তিনি কংগ্রেস করতেন তখন তিনি ছিলেন যৌবন। তখন তিনি  দেখেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কে। কাজেই উন্নয়নমূলক কাজ করার কোন সুযোগই পাইনি। ৩৪  টা বছর তখন কেটে গেছে। ৩৪ বছরে ও বামফ্রন্ট কে সরাতে পারা যায়নি এই রাজ্যের কংগ্রেস। তাই তাদের নেত্রী ঠিক করেছিলেন কংগ্রেসের থেকে বামফ্রন্টকে সরানো যাবে না।আমাদের নেত্রী মনে করতেন তখন পশ্চিমবঙ্গে লড়াই আর  দিল্লিতে ভাই ভাই। একইসঙ্গে বসে লাড্ডু খায় ।

এই রাজনীতি থেকে আমাদের নেত্রী বেরিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এবং মানুষের যেখানেই অন্যায় সেখানেই পৌঁছে গিয়ে প্রতিবাদ করতেন আমাদের নেত্রি মমতা দি  । এমন লড়াই করতে করতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভেবে নিল যে এই রাজ্যে মমতা ই  একমাত্র বিকল্প পথ। কারণ তখন কংগ্রেসের ভূমিকা জাতীয় স্তরে ছিল এক আর এই রাজ্য স্তরে  ছিল আর এক। তাই তাদের এই দুমুখি মনোভাবে মানুষ ছিল চূড়ান্ত বিভ্রান্ত।

তাই পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ঠিক করে নিয়েছিল ২০১১ সালে যে এই রাজ্যে বামফ্রন্টকে সরাতে গেলে একমাত্র বিকল্প তৃণমূল কংগ্রেস কেই থাকতে হবে এই রাজ্যে। মমতায় সেই বিকল্প মুখ সেই পথ। যার প্রেরণায় সাধারণ মানুষ নতুন পথের সন্ধান পেতে পারে। যে পারবে এই বামফ্রন্টকে সরাতে। সেই কারণেই ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই রাজ্যে ক্ষমতায় মমতাকে নিয়ে এসেছেন। আর সেখান থেকেই শুরু হলো জয়যাত্রা,  উন্নয়নের যাত্রা। সেখান থেকেই আজ ইটাহার কে  ধীরে ধীরে একটা জায়গায় আনতে পেরেছেন তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায়। অমলবাবু আরো বলেন, উত্তর দিনাজপুর জেলার কৃষিপ্রধান একটি ব্লক ইটাহার। এখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প করার জন্য অনেক শিল্পপতিদের আহবান করা হয়েছিল।এখানে মূলত ধানের চাষ হয়। তাই বেশ কিছু রাইস মিল রয়েছে। এছাড়া এই জেলার প্রচুর ভুট্টা চাষ হয় তাই ভুট্টা কে কেন্দ্র করে শিল্প গড়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন রায়গঞ্জে স্পিনিং মিলের যে জায়গা পড়ে আছে যে শিল্পটা কংগ্রেস আমলে তৈরি হয়েছিল।  উত্তরবঙ্গের একমাত্র শিল্প বলতে ছিল রায়গঞ্জের স্পিনিং মিল। যার সুতার ডিমান্ড সমগ্র ভারতবর্ষে ছিল। স্পিনিং মিলের সুতোর জন্য তাঁতিরা রাত জেগে লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকতো। কিন্তু সেই মিলটা বামফ্রন্ট আমলে একদম শেষ করে দেয়। তিনি তৃণমূল সরকারের আমলে  এই দপ্তরের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে  এই মিলের রুগ্নতার কারণ খতিয়ে দেখেন। খতিয়ে দেখতে গিয়ে তিনি দেখতে পান এই স্পিনিং মিলের সুতো সারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বিক্রি হয় সেই অর্থ মিলের ফান্ডে জমা না হয়ে  তার টাকা চলে গিয়েছিল বামফ্রন্টের নেতাদের পকেটে। এটাই অন্যতম ছিল রায়গঞ্জে স্পিনিং মিলের ধ্বংসের অন্যতম কারণ। তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই জেলায় শিল্প স্থাপনের জন্য প্রচন্ড আগ্রহী তাই মাঝে মাঝে শিল্পপতিদের সঙ্গে আলাপচারিতা করেন কিভাবে এই জেলায় নতুন শিল্প করা যায়। তিনি বলেন আগামীদিনে নিশ্চয়ই এখানে বড় শিল্প হবে বলে তার আশা। ইটাহারে অন্যতম একটি সমস্যা নদী ভাঙ্গন এই নদী ভাঙ্গন সমস্যা মেটাবার জন্য বিধায়ক কি ভূমিকা নিয়েছেন এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ইতিমধ্যে এই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে পাঁচটি প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এখানে মোট ৩১  টি প্রকল্প রয়েছে। যে প্রকল্প গুলির মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। তিনি জানান এবছর মাননীয় মন্ত্রী সুভেন্দু অধিকারি ইটাহারে নদী ভাঙন প্রতিরোধে পাঁচটি প্রকল্পের অনুমোদন করেছেন। ইতিমধ্যে চারটি টেন্ডার হয়ে গেছে। আরেকটি টেন্ডারের কাজ হওয়ার পথে।কারণ সম্পূর্ণ টাকা একবারে পাওয়া যাচ্ছে না তাই একে একে প্রকল্পগুলির কাজ শুরু করা হচ্ছে এখানে। কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আরো কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ প্রতিবছর করেই করা হচ্ছে। গ্রীষ্মের সময় প্রচন্ড জল কষ্টের  সম্মুখীন হয় ইটাহার ব্লক। নাজেহাল হতে হয় বহু মানুষকে। এই সমস্যা সমাধানে কি উদ্যোগ নিয়েছে বিধায়ক এ প্রশ্নের উত্তরে অমল বাবু জানান, ইটাহার ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলো ইতিমধ্যে মার্ক টু টিউবল বসিয়ে জলের কষ্ট অনেকটা মিটিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া তারা  সমষ্টিগত ভাবে পিএইচইর পরিকল্পনা নিয়েছেন। একশ শতাংশ কভারেজ করা হবে  ইটাহারের মাটিতে  পিএইচইর পরিকল্পনার মাধ্যমে  । ইতিমধ্যে চৌদ্দটা পিএইচই র   কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। তারা জল দিচ্ছে। এছাড়াও আরও প্রায় ১৪  টি র মতো পিএইচইর  প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। অমলবাবু বলেন পিএইচইর   মাধ্যমে যে জল সরবরাহ করা হবে ইটাহারের গ্রামগুলিতে তাতে জল কষ্ট আর তেমন থাকবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। যেমন জয়হাট , ছয়ঘোড়া, মারনাই, সবচেয়ে বেশি খরা প্রবণ এলাকা । তাই জয়হাটে ইতিমধ্যে তিনটি পিএইচইর  প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ছয় ঘোড়া তে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে ওটা সম্পূর্ন হয়ে গেলে সেখানে ও  আর কোন জল কষ্ট থাকবে না। তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্প অনুসারে প্রতিবছরই প্রতিটি গ্রামে কিছু কিছু করে পিএইচইর   মাধ্যমে প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। এবছর ও সাতটি পিএইচইর  প্রকল্পের কাজ শুরুর অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন আগামী দিনে তার স্বপ্ন রয়েছে, রাস্তাগুলোকে আরো বড় করে জনসাধারণের চলাচলের আরো যাতে সুবিধা হয় সেদিকে লক্ষ রাখা তেমনই ইটাহার হলো এমন একটি জায়গা যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার  কোন অভাব নেই । উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার  হলো এমন একটি জায়গা যেখান থেকে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে এমন কোন জায়গা নেই যে এখান থেকে যাওয়া র কোন অসুবিধা আছে। কিন্তু মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ইটাহারে যে  প্রজেক্টটা দিয়ে গিয়েছিল রায়গঞ্জ গাজল ব্রডগেজ লাইন। রেলমন্ত্রী থাকার সুবাদে সেই সময় এই প্রোজেক্টের জন্য  জায়গা ও কিনে দিয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অমলবাবু বলেন জানিনা বর্তমানে কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বের কেন্দ্রীয় সরকার সে কাজে হাত দিয়েছে কিনা। অবিলম্বে এই কাজ করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। তিনি বলেন এই কাজটা হয়ে গেলে ইটাহারের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ হবে। শুধু তাই নয় এই রেললাইন হয়ে গেলে উত্তর দিনাজপুরে কোন জায়গায় জংশন নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকার সুবাদে সেই সময় ইটাহারে একটি জংশন করার কথা বলেছিলেন এখানে । তিনি বলেন এর মধ্যেও তিনি এই প্রকল্পের কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয় তার জন্য রেলমন্ত্রীর কাছেও চিঠি লিখেছেন।উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন আপনি। তাই মেডিকেল কলেজের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফিরিয়ে  আনতে কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন ?  এই প্রশ্নের উত্তরের তিনি জানান, আপাতত আগামী কুড়ি তারিখে একটি মিটিং রয়েছে মেডিকেল কলেজে সেখানে সবকিছু ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে তিনি জানান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফিরিয়ে আনতে তিনি বদ্ধপরিকর আর তিনি আনবেনই। তবে তিনি বলেন মেডিকেল কলেজ চত্বরে যে দালাল রাজ বিরাজ করছে তাকে নির্মূল করাই হবে তার প্রথম কাজ   । জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন এক সময়  তখন যে কাজ করতেন আর আজ বিধায়ক হয়ে যে কাজ করছেন তার মধ্যে আপনি নিজেকে কতটা তফাৎ মনে করছেন  এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পদ  কোন  না  থাকলেও মানুষের সাথে তার সম্পর্ক বরাবরই ভালোই আছে। পদে থাকলে একটা চিরাচরিত নিয়মের মধ্যেই তাকে চলতে হতো আজ পদ না থাকলেও তিনি স্বাধীনভাবে এদিক ওদিক ঘুরতে পারছেন মানুষের সাথে মেলামেশা করতে পারছেন মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে পারছেন এর চেয়ে বড় কাজ আর কোন কিছু হতে পারে না। তিনি বলেন মানুষের সুখে ও  দুঃখে সাথে তিনি ছিলেন আছেন এবং আগামী দিনেও থাকবেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *