এবারে বোল্লা কালীপুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজন হচ্ছে।
1 min readএবারে বোল্লা কালীপুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজন হচ্ছে।
করোনার রেশ কাটিয়ে দু’বছর পর এবারে বোল্লা কালীপুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজন হচ্ছে। আগামী ১১ নভেম্বর পুজো। চলবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। পুজোকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই জোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজো কমিটির সঙ্গে প্রশাসনের কোনও বৈঠক এখনও হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এই সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক করা হবে বলে কমিটি সূত্রে খবর। করোনার জন্য দু’বছর ধরে বলি প্রথা বন্ধ ছিল। এবছর বলি হবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। গত দু’বছর করোনার জন্য পাঁঠা বলি বন্ধ থাকার কারণে অনেক ভক্ত চাইছেন এবারও তা বন্ধ রাখা হোক। আবার অনেকে চাইছেন প্রাচীন কালের নিয়ম যেভাবে চলে আসছে সেভাবেই চলুক। একইভাবে বলি প্রথা চালু রাখার কথা জানানো হয়েছে পুজো কমিটির তরফ থেকেও। কমিটি চাইছে পুরনো রীতি যেন বজায় থাকে বোল্লা কালীপুজোতে। বালুরঘাট ব্লকের বিডিও অনুজ শিকদার বলেন, বোল্লা কালীপুজো ও মেলা নিয়ে এখনও পর্যন্ত পুজো কমিটি আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেনি।
কমিটি এখনও কোনও অনুমতি নেয়নি। এই সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক হতে পারে। বোল্লা পুজো কমিটির ম্যানেজার সুব্রত মণ্ডল বলেন, দু’বছর পরে এবার আগের মতো পুজো ও মেলা করা হবে। দু’বছর করোনার জেরে বলি বন্ধ ছিল। প্রশাসনের সঙ্গে এখনও আমাদের কোনও বৈঠক হয়নি। তবে আমরা চাইছি প্রাচীন কালের নিয়ম মেনে পুজো হোক। সঙ্গে বলি প্রথা চালুরও অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হবে। তবে বলি চালু নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কথিত আছে, বোল্লা কালীপুজোর শুরু হওয়ার আগে এখানকার জমিদার ছিলেন বল্লভ চৌধুরি, যাঁর নাম অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে বোল্লা। আজ থেকে ৪০০ বছর আগে এলাকার এক মহিলা স্বপ্নাদেশে কালো একটি পাত্থরখণ্ড কুড়িয়ে পেয়ে সেটিকে প্রথম মাতৃরূপে পুজো শুরু করেছিলেন। এর পর জমিদার মুরারীমোহন চৌধুরী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে যান। তার পর তিনি বোল্লা কালী মাতার কাছে মানত করে মামলায় জয়লাভ করেন।
সেই বছর থেকেই রাস পূর্ণিমার পরে শুক্রবার ঘটা করে পুজোর আয়োজন করেন। বিভিন্ন নথি পত্রে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নাম উল্লেখ রয়েছে। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ মেলার মধ্যে বোল্লা কালীপুজো ও মেলা বিখ্যাত। বোল্লা পুজো ও মেলাকে ঘিরে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীদের ঢল নামে। মেলায় শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য একাধিক খেলার সরঞ্জাম থাকে। যার ফলে পুজোকে পাশাপাশি মেলাকে ঘিরে ব্যাপক ভিড় নজরে আসে। দু’হাজারেরও বেশি ছোট কালীমূর্তি ভক্তরা বোল্লা কালীর কাছে নিবেদন করেন। সুষ্ঠুভাবে পুজো সম্পূর্ণ করতে কয়েক হাজার পুলিসের তরফে নজরদারি চালানো হয়। মেলায় যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই দিক নজর দিয়ে সাদা পোশাকে পুলিস মোতায়েন করা হয়। প্রচুর সিসিটিভি লাগিয়ে নজরদারি চালানো হয় গোটা এলাকায়। মেলায় কেপমারি করতে গিয়ে পুলিসের হাতে বহু দুষ্কৃতী ধরাও পড়েছে। পুজোর প্রথম দিন থেকে বিসর্জন পর্যন্ত ভক্তদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ভক্তদের দেওয়া প্রায় কয়েক হাজার মানতের কালী সারারাত পর্যন্ত পুজো হয়ে থাকে। হাজার হাজার পাঁঠার বলি হয়ে থাকে। অবশ্য, বিগত দু’বছর ধরে পাঁঠা বলি বন্ধ রয়েছে। তবে এবছর এখনও বলি নিয়ে কোনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন ভক্তরা।