মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি নীতি কে জলাঞ্জলি দিয়ে খোদ তৃণমূলের উপ-প্রধানের মদতেই কালিয়াগঞ্জ এর তৈরি হচ্ছে ধানের জমিতে কারখানা, এলাকায় ক্ষোভ
1 min readমুখ্যমন্ত্রীর কৃষি নীতি কে জলাঞ্জলি দিয়ে খোদ তৃণমূলের উপ-প্রধানের মদতেই কালিয়াগঞ্জ এর তৈরি হচ্ছে ধানের জমিতে কারখানা, এলাকায় ক্ষোভ
তন্ময় চক্রবর্তী কৃষি আমাদের ভিত্তি ,শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ ।এই শ্লোগানকে সামনে রেখে যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কি প্রশাসনিক স্তরে এবং দলীয় স্তরে নির্দেশ দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্য ঠিক তখন উল্টো ছবি ধরা পরল উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বোচা ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিন তোর গ্রামে। যেখানে দেখা গেল রাস্তার দুধারে বিঘার পর বিঘা জমিতে যখন ধান চাষ করছে কৃষকরা ঠিক সেখানেই সেই ধানি জমিতে কারখানা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে এলাকার এক উদ্যোগ প্রতি। যাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে গ্রামবাসীরা সরব হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি ধানি জমি নষ্ট করে কিভাবে কল কারখানা করতে পারে। আর কারাই বা এর অনুমতি দিল। এর পিছনে অদৃশ্য কোন শক্তির হাত থাকতে পারে।
গ্রামবাসীরা আবশ্যক বলেন আজকের দিনে টাকা দিলেই সব হয়ে যায় ।যেটা এখানে হয়েছে। না হলে এখানে যেভাবে বিঘার পর বিঘা জমিতে ধান চাষ হয় সেই ধান গাছ নষ্ট করে কিভাবে কারখানা বা গুদাম করার অনুমতি দিলো সরকার ।তারা কি দেখেও দেখেনা এইসব। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন কৃষি জমি নষ্ট করে কোন জায়গায় কল-কারখানা হতে পারবে না সেখানে এটা হলো কি করে।এদিকে বোচা ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের উপ প্রধান আরশাদ আলী বলেন মানুষের কর্মসংস্থান যেহেতু রাজ্য সরকার দিতে পারছে না সেই জন্য মানুষ নিজস্ব খরচা করে একটা কলকারখানা করতে চলছে নিজের সংসার চালানোর জন্য। এখানে কার ক্ষতি হবে কার ক্ষতি হবে না সেটা দায়িত্ব যে এখানে কল-কারখানা করছে তার না এর পুরো দায়িত্ব সরকারের। তিনি বলেন ব্লক থেকে এবং পঞ্চায়েত থেকে এবং বিএলআরও অফিস থেকে অনুমতি নিয়েই এই কল কারখানা এখানে হচ্ছে এখানে বেআইনি কিছু হচ্ছে না।
তিনি বলেন কৃষি জমি নষ্ট করে কখনোই এমন কাজ করা সম্ভব নয় কিন্তু প্রধান সাহেবের অনুমতি সাপেক্ষে এখানে এই কারখানা হচ্ছে বলে উপপ্রধান দাবি করলেন।অন্যদিকে কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিপা সরকার বলেন, কি জমি নষ্ট করে কিভাবে এই কল-কারখানা এখানে গড়ে উঠছে সে ব্যাপারে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই শুনলেন। তিনি বলেন খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে একটি তদন্তকারী দল কে সেখানে পাঠিয়ে পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হবে।কালিয়াগঞ্জ এর বি এল আর ও সুমন তামাং জানান, কৃষি জমি নষ্ট করে শিল্প হবে না এমন কোনো নির্দেশ যেহেতু সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কাছে কিছু আসেনি তাই তারা অনুমতি দিয়েছেন এখানে শিল্প করার ক্ষেত্রে। এখানে বেআইনি কাজ কোন হয়নি।এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই মোকলেসর রহমান বলেন , আমি বেকার ছেলে কিছু করে তো খেতে হবে তাই একটি গোডাউন করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এখানে বেআইনি কোন কিছু কাজ আমি করিনি। তিনি বলেন সমস্ত সরকারি অনুমতি নিয়ে আমি এই কাজ করছি। আমি একদিকে যেমন অঞ্চলের অনুমতি নিয়েছি তেমনি বিডিও র অনুমতি নিয়েছি।তবে মকলেশ্বর রহমান যাই বলুন না কেন তিনি কিন্তু তার কথামতো গোডাউন করছেন সেই কৃষিজমিতে যা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ সেই নীতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন যেখানে মকলেশ্বর বাবু এই গুদাম করছেন ধানী জমির উপর সেখানেও আবার সেই গুদামের উপর দিয়ে গিয়েছে 33000 ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন। তাই গ্রামবাসীরা বলছে একদিকে যেমন কৃষি জমি নষ্ট হল তেমনি এই গুদাম এখানে হলে বা কারখানা হলে তার উপর দিয়ে যখন 33000 ভোল্টের বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে তা কিন্তু এক বিরাট বিপদজনক অবস্থা। যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এইসব প্রশাসন কি দেখতে পায় না চোখে নাকি টাকা দিলেই সবকিছু মাফ হয়ে যায়। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন যেখানে মক্কেশ্বর বাবু ধানি জমিতে গুদাম করছেন সেখানেই আবার বোচা ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশরাদ আলীর ও জায়গা আছে। গ্রামবাসীরা বলছে আশরাফ বাদ বাবু নিজে তৃণমূল কংগ্রেস করলেও তিনি এই কাজে সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে।অবিলম্বে জেলা প্রশাসনের উচিত এই ধরনের ঘটনা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া নচেৎ আগামী দিনে যদি এইভাবে ধানী জমি তে কল-কারখানা বা গুদাম আরো হয় তাহলে কৃষকদের রুটিরুজি ব্যাপক আঘাত হানবে এবং তা যদি পরবর্তীতে গণ আন্দোলনের রূপ নেয় তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া প্রশাসনের পক্ষে দুষ্কর হয়ে উঠবে। তাই প্রশাসনের উচিত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া।