‘দুয়ারে সরকারে’ ভূরি ভূরি মানবিক ভাতার আবেদন, খতিয়ে দেখতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে
1 min read‘দুয়ারে সরকারে’ ভূরি ভূরি মানবিক ভাতার আবেদন, খতিয়ে দেখতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে
মানবিক ভাতা দেয় সরকার। শারীরিকভাবে কোনও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, এমন মানুষ এই ভাতা পান। অথচ এই ভাতা নিতে শ’য়ে শ’য়ে ভুয়ো আবেদন জমা পড়ার অভিযোগ উঠল কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে। সেই আবেদন আবার জমা দিয়ে গিয়েছেন ২০২১-২২ দুয়ারে সরকার শিবিরে। এমন ঘটনায় কার্যত চোখ কপালে ওঠার জোগাড় মহকুমা শাসকের।অভিযোগ, এই জালিয়াতির একটি চক্র কাজ করছে। মোটা টাকার বিনিময়ে যারা ভুয়ো শংসাপত্র বিক্রি করছে। সেই ভুয়ো শংসাপত্র নিয়েই মানবিক ভাতা পেতে আবেদনের লাইন সরকারের ‘দুয়ারে’।
কেতুগ্রাম-১ ব্লকের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে সবথেকে বেশি মানবিক প্রকল্পের জন্য আবেদনপত্র জমা পড়ে। এত আবেদনপত্র দেখে সন্দেহ হয় বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যালের। সূত্রের খবর, চিঠি দিয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হয় আবেদনকারীদের দেওয়া প্রতিবন্ধী শংসাপত্রগুলি আসল না ভুয়ো। পরে জবাব আসে অধিকাংশই ভুয়ো। শংসাপত্রে থাকা চিকিত্সকের সই বা সিলমোহর কোনওটাই আসল নয়।এই ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ। জানা গিয়েছে, টাকার বিনিময়ে একটি চক্র ৫০ শতাংশের বেশি ভুয়ো প্রতিবন্ধী শংসাপত্র করে দিয়েছে। নথি পরীক্ষার পর মহকুমার পাঁচ ব্লকে প্রায় সাড়ে ৪০০ ভুয়ো প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের হদিশ মিলেছে বলে সূত্রের খবর। সবথেকে বেশি নকল শংসাপত্র পাওয়া গিয়েছে কেতুগ্রাম-১ ব্লকে। ২৭৬টি ভুয়ো শংসাপত্র এখান থেকে পাওয়া গিয়েছে বলে খবর।মঙ্গলকোট ব্লকেও শতাধিক ভুয়ো শংসাপত্র পাওয়া গিয়েছে।
কেতুগ্রাম-২ ব্লকে ৫০-এর বেশি, কাটোয়ার ব্লকে ২৫টি মতো ভুয়ো শংসাপত্রের হদিশ মিলেছে বলে কাটোয় মহকুমা হাসপাতাল সুপার ধীরজকুমার রায় জানান। ব্লক প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কেতুগ্রাম-১ ব্লকের বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যাল বলেন, “গত দুয়ারে সরকারে যে কর্মসূচি গেল তাতে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে মানবিক ভাতার জন্য আবেদন পত্র জমা পড়ে। এত আবেদন দেখে কৌতূহলবশতই আমরা খতিয়ে দেখি। সেই সূত্র ধরেই কাটোয়া হাসপাতালকে জানাই। দফায় দফায় যাচাই করা হয়। তাতে আসল যেসব শংসাপত্র পেয়েছি, সেগুলিকে মানবিক ভাতার জন্য পাঠাই। যেগুলি নকল বাতিল করা হয়। আমরা তদন্ত করছি।”কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীরজকুমার রায় বলেন, “আমরা বিডিওদের কাছ থেকে তালিকা পাই। আমরা খতিয়ে দেখি। প্রায় ২০০-র বেশি আবেদন ভুয়ো। সবথেকে বেশি কেতুগ্রাম-১ ব্লকের। ডাক্তারের নাম, সুপারিনটেনডেন্টের নামে ভুয়ো সই রয়েছে। যে নথি দেখে আমরা এ বিষয়টা পরীক্ষা করি, সেটাতেও দেখা যায় কোনও এন্ট্রি নেই।” আপাতত মহকুমা প্রশাসন খতিয়ে দেখছে। তবে এত বড় চক্র যদি কাজ করে তা হলে তার পুলিশি তদন্তও তো প্রয়োজন। সেটা নিয়ে কী ভাবছে মহকুমা প্রশাসন, তার সদুত্তর এখনও মেলেনি।