ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট হাতে পেয়ে আরও একবার চোখ কপালে উঠেছে ইডি আধিকারিকদের
1 min readব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট হাতে পেয়ে আরও একবার চোখ কপালে উঠেছে ইডি আধিকারিকদের
ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট হাতে পেয়ে আরও একবার চোখ কপালে উঠেছে ইডি আধিকারিকদের। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সন্দেহজনক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। এমনকী পার্থ-অর্পিতা গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েকদিন আগে, জুলাই মাসেও অ্যাকাউন্টে তিনবার বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছিল। এই লেনদেনের পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা। ইডি সূত্রে খবর, বড় অঙ্কের এই লেনদেনগুলি হয়েছিল পার্থ-অর্পিতার জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট, অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেস, অনন্ত টেক্সফ্যাব, অর্পিতার নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, চারটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ও দু’টি ট্রাস্টির অ্যাকাউন্ট থেকে।
২০২০ সালে করোনার সময় ১৭, ১৯ ও ২০ মার্চ আরও তিনটি বড় অঙ্কের লেনদেনের তথ্য সামনে এসেছে। এক্ষেত্রেও টাকার পরিমাণ কয়েক কোটি। এই সময়ের মধ্যে মোট পাঁচটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ইডির আধিকারিকরা। এখানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা কখনও ক্রেডিট হয়েছে, কখনও ডেবিট হয়েছে। ‘অপা’র ব্যালান্স শিটে এই লেনদেন ‘ব্যবসায়িক’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে, এই সমস্ত টাকা বিভিন্ন পরিষেবা, রিয়েল এস্টেট ও সোনার ব্যবসায়িক লেনদেন।টাকার উত্স কোথায়? ইডির আধিকারিকরা এই প্রশ্নের উত্তরের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সূত্রের খবর, মেধা তালিকায় নাম না ওঠা চাকরিপ্রার্থীরা নগদ টাকা নিয়ে সরাসরি এসএসসি অফিসে যেতেন। শুধু এসএসসি নয়, এর মধ্যে ছিলেন গ্রুপ ডি, নবম-দশম এবং টেটের চাকরিপ্রার্থীরাও। এসএসসি দপ্তরের বাইরে সেই টাকা সংগ্রহ করত পার্থ-ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তি। সেখান থেকে নগদ টাকা সরাসরি চলে যেত হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটে। অর্পিতার সেই ফ্ল্যাট থেকেই ইডির আধিকারিকরা ২১ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করেছিলেন। এসএসসি দপ্তরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে এই তথ্য পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। আরও জানা যাচ্ছে, নগদ টাকা দিলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেখানেই নিয়োগপত্র দেওয়া হতো চাকরিপ্রার্থীদের। কোনও প্রমাণ না রাখার জন্য এই নিয়োগপত্র প্রাপকদের নাম ওয়েবসাইটে দেওয়া হতো না। এভাবে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ টাকা বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হতো বলে দাবি ইডির। অর্থাত্ দুর্নীতির জাল যে আরও বিস্তৃত, তা বলাই বাহুল্য।টাকার উৎসের বিষয়ে আরও একটি তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনের সময় প্রার্থী করিয়ে দেওয়ার নামেও পার্থ নগদ অর্থ নিয়েছিলেন বলে ইডি সূত্রে খবর। এক্ষেত্রেও অঙ্কটা নেহাত কম নয়। প্রার্থী প্রতি ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন ইডির আধিকারিকরা। উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ নগদের মধ্যে পুরসভা নির্বাচনের টাকা রয়েছে বলেও অনুমান ইডির আধিকারিকদের। তবে কত টাকা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির এবং কতই বা পুরসভার টিকিট বিলির, সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।